প্রতীকী ছবি।
টোল ফ্রি নম্বরের সামনে বসে আছেন ‘কমপ্লেন মনিটরিং সেল’-এর এক কর্মী। ফোন বেজে উঠে। ফোনের ও প্রান্ত থেকে ভেসে ওঠে এক নারী কণ্ঠ, ‘‘বয়ফ্রেন্ড পাত্তা দিচ্ছে না। কিছু করতে পারেন?” বিরক্ত মুখে ফোন রেখে দেন তিনি।
জানালেন, নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে বা কিছু জানা থাকলে এই নম্বরে ফোন করতে পারেন সাধারণ মানুষ। আছে তিনটি পোর্টাল। সেখানেও অভিযোগ জানাতে পারছেন ভোটারেরা। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টিকে নেহাতই ‘মজা’র জায়গায় নামিয়ে আনছেন কেউ কেউ। কখনও বা ফোন আসছে, “দাদা আমার বউ রান্না করেনি। কী করি বলতে পারেন?” কেউ বা ‘সিটিডেন ভিজিল অ্যাপ’-এ পাঠিয়ে দিচ্ছেন গামছা পরা সেলফি। কেউ বা বাগানের গোলাপ ফুলের ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এ ভাবে ‘মিস ইউজ’-এ খানিক হলেও হতাশ নির্বাচন কর্মীরা।
জেলা নির্বাচন কমিশন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ‘কমপ্লেন মনিটরিং সেল’-এ এই মুহূর্তে ৩৪ জন কর্মী তিনটি ‘শিফটে’ ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন। রয়েছে ১২৬টি ‘ফ্লাইং স্কোয়াড’। প্রতিটা টিমে আছে এক জন করে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের আধিকারিক। প্রতিটি গাড়িতে লাগানো আছে জিপিএস সিস্টেম। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের আধিকারিকদের মোবাইল ট্রাক করে রাখা হয়েছে। যাতে জেলা থেকে প্রতি মুহূর্তে তাঁদের গতিবিধির উপরে নজর রাখা যায়। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই দেখে নেওয়া হচ্ছে সেই ঘটনাস্থলের কাছে আছে কোনও টিম। তাদেরকেই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
দফতর সূত্রে খবর, জেলায় যাতে কোনও রকম নির্বাচন বিধিভঙ্গ না হয় তার জন্য ওই প্রক্রিয়া চলছে। আর সেখানেও নানা ভাবে ভুয়ো খবর দিয়ে বা অভিযোগ জানিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যাচ্ছে তেমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। আবার কখনও দেখা যাচ্ছে যে, এমন অভিযোগ জানানো হচ্ছে, যার সঙ্গে নির্বাচনের কোনও সম্পর্কই নেই।
জেলার প্রশাসনের এক কর্তরা কথায়, “এই মুহূর্তে সকলের উপরেই প্রবল চাপ রয়েছে। তার মধ্যে এই ধরনের ‘মজা’য় মোটেও আমরা খুশি নই।” দফতরের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, তবে শুধু মজা নয়, অনেকেই ফোনে বা পোর্টালে প্রশাসনিক বিষয়েও অভিযোগ জানাচ্ছেন। কর্মীদের কথায়, ‘‘এত সবের মধ্যে ঠিক অভিযোগগুলির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলছেন, “আমাদের কমপ্লেন মনিটরিং সেল ও ফ্লাইং স্কোয়াড দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেছে। তবে ভুয়ো অভিযোগ যত কম আসবে তাদের কাজ করতে আরও সুবিধা হবে।’’