ডেঙ্গি আতঙ্কে কাবু ধুলিয়ান

সমশেরগঞ্জে আতঙ্ক এমনই ছড়িয়েছে যে, জ্বরের উপসর্গ দেখা দিলেই বিভিন্ন হাসপাতাল, নার্সিংহোমে ছুটছেন লোকজন। আতঙ্ক কাটাতে শনিবার থেকে পঞ্চায়েতে ও ব্লক স্তরে দফায় দফায় শুরু হয়েছে বৈঠক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সমশেরগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ১০:৩০
Share:

দিন কয়েক ধরে জ্বরে ভুগছিলেন লক্ষ্মীনগরের কালাম শেখ। সারছে না দেখে ধুলিয়ানে এক বেসরকারি ল্যাবে রক্ত পরীক্ষা করান। রিপোর্ট রক্তে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। শুনে পেটে হাত-পা সেঁধিয়ে গিয়েছিল পরিবারের লোকজনের। তড়িঘড়ি করে রোগীকে নিয়ে ছোটেন কলকাতায় আই ডি হাসপাতালে। সেখানে ফের রক্ত পরীক্ষা হয়। জানা যায় ডেঙ্গি নয়, স্রেফ ‘ভাইরাল ফিভার’-এ কাবু কালাম। যা শুনে কপাল থেকে চোখ নামছে না তাঁর পরিজনদের।

Advertisement

কালামের এই ঘটনা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে। সামান্য জ্বর হলে অনেকেই এখন রক্ত পরীক্ষা করতে ল্যাবগুলোর কড়া নাড়ছেন। অনেকই রিপোর্ট ধরাচ্ছে, ডেঙ্গি পজিটিভ বলে। আতঙ্ক ছড়াচ্ছে আগুনের গতিতে।

সমশেরগঞ্জে আতঙ্ক এমনই ছড়িয়েছে যে, জ্বরের উপসর্গ দেখা দিলেই বিভিন্ন হাসপাতাল, নার্সিংহোমে ছুটছেন লোকজন। আতঙ্ক কাটাতে শনিবার থেকে পঞ্চায়েতে ও ব্লক স্তরে দফায় দফায় শুরু হয়েছে বৈঠক। সবচেয়ে উদ্বেগজনক অবস্থা প্রতাপগঞ্জ, ভাসাই পাইকর ও তিনপাকুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চসকাপুর, হাউসগর, সাহেবনগর, দোগাছি গ্রামগুলিতে।

Advertisement

সমশেরগঞ্জে বৃষ্টির জল সহজে বের হতে চায় না। যা মশার ডিম পাড়ার জন্য আদর্শ। সে কারণে ফি বছর ডেঙ্গি হানা দেয় ওই সব এলাকায়। সরকারি হিসেবে সমশেরগঞ্জ ব্লকে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি ধরা পড়েছে ১১ জনের রক্তে। সমশেরগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক গোলাপ হোসেন সে কথা জানান। কিন্তু প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলির দাবি, ব্লকে ‘ডেঙ্গি ‘পজিটিভ’-এর সংখ্যা অন্তত ৩০। তাই আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য খানিক হলেও বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলোকে দুষছেন গোলাপ। তাঁর দাবি, ডেঙ্গি পরীক্ষার সর্বাধুনিক ব্যবস্থা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও দু’টি নামী ল্যাব ছাড়া জেলার কোথাও নেই। অথচ অনেকেরই রক্ত পরীক্ষা করে বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলোতে ডেঙ্গি পজিটিভ বলে রিপোর্ট দেওয়ায় আতঙ্ক বাড়ছে। তাই তাঁর পরামর্শ, ‘‘জ্বর হলে ইন্য জায়গায় রক্ত পরীক্ষা না করিয়ে সরাসরি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীদের আসতে বলা হচ্ছে।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরূপম বিশ্বাসের আশ্বাস, “ডেঙ্গি নিয়ে অযথা ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”

যদিও ডেঙ্গি নিয়ে বেসরকারি ল্যাবের রিপোর্ট মানেই ভুল তা মানতে রাজি নন ল্যাবের কর্তারা। একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের মালিক অলক দাসের দাবি, ‘‘বেসরকারি ল্যাবগুলিতে তিনটি ধাপে র‌্যাপিড টেস্ট কিটের সাহায্যে ডেঙ্গির পরীক্ষা করা হয়। তাই ডেঙ্গির রিপোর্ট সবক্ষেত্রে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন