ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
ঘর তাঁদের অপেক্ষায় থাকে। অপেক্ষায় থাকে স্থানীয় বাজারও!
দুয়ারে ইদ্দুজোহা। এ দিকে, মনখারাপ বসে আছেন বাড়ির লোকজন। বাজারও তেমন জমেনি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘‘কেরলের বানই তো সব শেষ করে দিল। ভিন রাজ্যের শ্রমিকেরা দেশে না ফিরলে বাজার কী করে জমবে বলুন তো?’’
কথাটা কিন্তু কথার কথা নয়। ইদ-উল-ফিতরের বাজার ভালই জমেছিল। তবে এ বার ইদুজ্জোহার বাজার নিয়ে উদ্বেগে ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পুজো-পরবে বাজার জমে ওঠে পাট আর ভিনরাজ্যের শ্রমিকদের টাকায়। এ বারও তাঁরা ভেবেছিলেন, ইদুজ্জোহার বাজার জমে যাবে। কারণ, যাঁরা ইদ-উল-ফিতরে আসতে পারেননি তাঁদের সকলের ইদুজ্জোহায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সব ভাসিয়ে দিল কেরলের বান। ইসলামপুর ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক শঙ্কর মণ্ডল বলছেন, “দু’দিক থেকেই আমরা চাপে। কারণ, এখনও বেশিরভাগ চাষির পাট ঘরে ওঠেনি। ফলে তাঁরা এখনও বাজারে আসছেন না। অন্য দিকে, কেরলে বন্যা পরিস্থিতির জেরে সেখানে কাজ না পেয়ে অনেকে টাকা পাঠাতে পারছেন না। আবার যাঁদের ফেরার কথা ছিল, তাঁরাও ফিরতে পারছেন না।’’ জলঙ্গির পাট চাষি রেজাউল করিম বলছেন, ‘‘গত ইদে বাজার করতে পারিনি। এ বারে বৃষ্টি কম হওয়ায় সময় মতো পাট কাটতে পারিনি। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আগাম কিছু টাকা পেলে বাজার করব।’’
ডোমকলের যুগিন্দার মজিবুর রহমান, হাসানপুরের মহম্মদ পিয়ার সম্প্রতি কেরল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত দেড় মাস ধরে কেরলের বিভিন্ন এলাকায় মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি কেরলে বিভিন্ন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টির কারণে তাঁরা এই দেড় মাসে বেশিরভাগ দিনই কাজ পাননি। ফলে অন্য বারের মতো তাঁরা টাকাও আনতে পারেননি। যুগিন্দার মনিরুল ইসলাম এখনও জলবন্দি কেরল থেকে বাড়ি ফিরতে পারেননি। মনিরুল বলছেন, “বন্যার জেরে ঘর থেকেই তো বেরোতে পারছি না। ইদের বাজারের জন্য টাকা পাঠাব কী করে?”