আধার কার্ড পেতে রাত জেগে লাইন

কেমন চলছে প্রশাসনের কাজকর্ম তা সরেজমিন দেখতে হঠাৎই হাজির আনন্দবাজার। কী দেখা গেল?তাঁরা জানান, আধার কার্ড সংশোধন করতে এসেছেন তাঁরা। কেউ এসেছেন পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদ থেকে।

Advertisement

সন্দীপ পাল 

পলাশি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:২২
Share:

টোকেনের অপেক্ষায়। শুক্রবার রাতে পলাশিতে। নিজস্ব চিত্র

ব্যাঙ্কের সামনে বিছানা পেতে বসেছেন জনা কয়েক লোক। কেউ পেতেছেন চট। নোট বাতিলের পরে ব্যাঙ্কের সামনে ছোট ছোট জটলার ঘটনা মনে পড়িয়ে দিচ্ছিল সেই দৃশ্য। কৌতুহলী হয়ে প্রশ্ন ছুঁড়তে যা উত্তর মিলল তা-ও কম যায় না।

Advertisement

তাঁরা জানান, আধার কার্ড সংশোধন করতে এসেছেন তাঁরা। কেউ এসেছেন পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদ থেকে। কেউ বা স্থানীয়। এ ভাবেই পলাশির ওই ব্যাঙ্কের সামনে বিনিদ্র রাত কাটাবেন। ভোরে ব্যাঙ্কের সামনে লাইনে দাঁড়াবেন। ভোরে তাঁদের টোকেন দেওয়া হবে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রথম ২০ জন সেই টোকেন পাবেন। বাকিদের ফিরে যেতে হবে। তাই প্রথম ২০-র মধ্যে যাতে থাকতে পারেন তাই ব্যাঙ্কের সামনে এমন ‘অবস্থান’।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কারও কার্ড এখনও হয়নি। আবার কার্ড হলেও তা অজস্র ভুলে ভরা। কারও নামের বানান ভুল। কারও জন্মের তারিখ ভুল। কারও কার্ডে স্বামীকে বাবা লেখা হয়েছে। ভুল রয়েছে ঠিকানাতেও। অনেকে আবার পাল্টাতে চান ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর। যা সংশোধন করতে গিয়ে হয়রান হতে হচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে ব্যাঙ্কের সামনে ভিড় জমতে শুরু করে। রাত বাড়লে তা আরও বাড়ে। অনেক সময় নাম লেখা ও লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে কথাকাটাকাটিও লেগে যায়।

Advertisement

শুক্রবার রাত জেগে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন খাবির মণ্ডল। তিনি বলছেন, ‘‘সারারাত লাইনে দাঁড়িয়েই তবে টোকেন পেয়েছি। কষ্টের শেষে এইটুকু হয়েছে তাতেই শান্তি।’’ ছয় বছরেরে ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন উপনাহার বিবি। তিনি বলেন, ‘‘শুনলাম রাতে না থকলে আধার কার্ড করা যাচ্ছে না। তাই ছেলেকে নিয়ে চলে এসেছি। আমার বাড়ির কারও আধার কার্ড হয়নি।’’

স্থানীয় বাসিন্দা বিভাস সাহা বলেন, ‘‘একই অবস্থা দেখেছিলাম নোটবন্দির সময়। প্রথম দেখে একটু অবাক হয়েছিলাম। পরে সব শুনলাম। এই বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।’’

এই বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ফোন করা হলে কেউ ফোন তোলেননি। জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘আধার কার্ড নিয়ে মানুষ যে হয়রান হচ্ছে তা শুনেছি। বিষয়টি এখন কোন পর্যায়ে দাঁড়িয়ে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব। পলাশিতে কেন রাতে লাইন দিতে হচ্ছে তা-ও দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন