খালি পেটে কি আর বিক্ষোভ হয় নাকি?
তা-ও আবার দু’-এক ঘণ্টার ব্যাপার নয়। দিনভর কর্মসূচি। আর সেই কারণে দূরদূরান্ত থেকে আসা কর্মী-সমর্থকদের জন্য খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করল তৃণমূল।
সোমবার দুপুরে তেহট্টের মহকুমাশাসকের দফতর লাগোয়া মাঠে শীতের মিঠে রোদ্দুর গায়ে লাগিয়ে হাজার তিনেক নেতা-কর্মী-সমর্থক আয়েস করে খেলেন গরম খিচুড়ি, ডিমের ঝোল আর টম্যাটোর চাটনি। দলেরই এক কর্মীর কথায়, ‘‘এক যাত্রায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও পিকনিক দু’টোই হল।’’
কেন্দ্র সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ও দলীয় দুই সাংসদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করেছিল তেহট্ট বিধানসভা তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, মঙ্গল ও বুধবারে একই ভাবে করিমপুর ও পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকার নেতা-কর্মীদেরও ওই একই জায়গায় সমাবেশ করার কথা।
এ দিন তেহট্ট বিধানসভা এলাকার দিঘলকান্দি, নারায়ণপুর, ফাজিলনগরের মতো বেশ দূরের এলাকা থেকে লোকজন গিয়েছিলেন ওই সমাবেশে। তাঁদের কথা ভেবেই খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করে দলেরই কিছু লোকজন। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘কেউ চল্লিশ কিলোমিটার, কেউ আবার পঁয়ত্রিশ কিলোমিটার দূর থেকে এসেছিলেন। সেই সকালে তাঁরা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। দিনভর খালি পেটে থাকা সম্ভব নাকি! সেই কারণেই এ দিন খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল।’’
ফলে মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে যখন বিক্ষোভ-সমাবেশ চলছে, সেখান থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বড় কড়াইয়ে ফুটছে খিচুড়ি, ডিমের ঝোল। শীতের দুপুরে ঠিক যেন পিকনিকের আবহ। দলীয় কর্মসূচি ও রান্নার মাঠে দু’জায়গাতেই লোকজনের আনাগোনা দেখা গিয়েছে।
তেহট্টের এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, ‘‘থার্মোকলের থালায় গরম খিচুড়ি, ডিমের ঝোল আর চাটনি দিয়ে প্রায় তিন হাজার মানুষ তৃপ্তি করে খেয়েছেন।” এ দিন ওই বিক্ষোভ সমাবেশে ছিলেন তেহট্টের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্তও। তিনি বলেন, “বহু দূরের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে লোকজন এসেছিলেন। তাঁরা সারাদিন এখানে ছিলেন। তাই বিক্ষোভ সমাবেশের শেষে তাঁদের খিচুড়ি খাওয়ানো হয়েছে।’’
তাঁর সংযোজন, ‘‘দলের কিছু ছেলে তাঁদের নিজেদের উদ্যোগে এই ব্যবস্থা করেছিলেন। যাবতীয় খরচ তাঁরাই বহন করেছেন।”