nakashipara

রাস্তা বিপজ্জনক বহু জায়গায়, দেখছে কে?

এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল রাস্তা সম্প্রসারণ করার। বেথুয়াডহরি টোল প্লাজ়ার আগে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে অসম্পূর্ণ অংশের কাজ জমিজটের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই আটকে রয়েছে।

Advertisement

সন্দীপ পাল , অমিত মণ্ডল 

নাকাশিপাড়া, হরিণঘাটা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ১০:৩১
Share:

বিপজ্জনক: চার লেনের রাস্তা মিশেছে এক লেনে। দেবগ্রাম পেট্রোল পাম্পের কাছে। নিজস্ব চিত্র

মারাত্মক দুর্ঘটনার পর কিছুটা টনক নড়েছে পুলিশ-প্রশাসনের, কিন্তু তাতে বিপদের আশঙ্কা কমছে না।

Advertisement

এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল রাস্তা সম্প্রসারণ করার। বেথুয়াডহরি টোল প্লাজ়ার আগে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে অসম্পূর্ণ অংশের কাজ জমিজটের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই আটকে রয়েছে। শুক্রবার সকালে সেখানে দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে পাঁচ জনের। রাস্তার অসম্পূর্ণ অংশের জন্য চার লেন রাস্তা হঠাৎ দু’লেনের হয়েছে। লেন পরিবর্তন করতে গিয়ে মুখোমুখি চলে আসে দু’টি গাড়ি। তাতেই ঘটে দুর্ঘটনা। শুক্রবারই জেলার একাধিক কর্তা জাতীয় সড়কের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান।

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, শুধু ওই রাস্তা নয়, জেলার একাধিক জায়গায় অনেক রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গল লেন হয়ে থাকায় বা জমি জটের কারণে রাস্তা সম্প্রসারণ আটকে থাকায় যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। সে ব্যাপারে প্রশাসন নির্বিকার।

Advertisement

কালীগঞ্জ ব্লকের চাঁদপুরের প্রায় ৪০০ মিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরেই সিঙ্গেল লেন হয়ে আছে। জমি নিয়ে গোলমালে হাইকোর্টে কেস চলছে হাইওয়ে দফতরের সঙ্গে। চাঁদপুরের মোড় গাড়ি চালকদের কাছে আতঙ্কের। জাতীয় সড়কে ওই বাঁকে ছোট-বড় দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। অভিযোগ, প্রশাসন সব জেনেও চুপ। ওই এলাকা থেকে কয়েকশো মিটার এগিয়ে দেবগ্রামে কাটোয়া মোড়-সংলগ্ন পেট্রোল পাম্পের কাছেই সংকীর্ণ বাঁক আছে। বহরমপুরগামী সব গাড়িকেই তা পার হয়ে বিপরীত লেনে ঢুকতে হয়। অনেকেই ভুল করে বা বুঝতে না পেরে সোজা চলে যান। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। কিছুদিন আগেও এক মোটরবাইক চালকের এই ভাবে মৃত্যু হয়। ওই মোড় থেকে কাটোয়া মোড় হয়ে দেবগ্রাম বাজার পার করে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার সম্প্রসারণও জমি জটে আটকে আছে।

জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ হরিণঘাটা এলাকাতেও ধীর গতিতে হচ্ছে বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের কাজের পাশাপাশি হরিণঘাটা এলাকায় জাগুলি চৌমাথা, কল্যাণী মোড় ও বিরহী বাজার এলাকায় আন্ডারপাসের কাজও চলছে। এই তিন জায়গার মধ্যে জাগুলি চৌমাথা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। সেখানে এই সব কাজ মিলিয়ে প্রবল যানজট তৈরি হচ্ছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, বড় জাগুলি থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ৬৭ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এর মধ্যে ৩৮ কিলোমিটার চার লেনের কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি ২৯ কিলোমিটারের কাজ দ্রুত গতিতে করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে সমস্যা হচ্ছে ফ্লাইঅ্যাশ পাওয়া নিয়ে।

বড় জাগুলি থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ ডিসেম্বর মাসে। ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া’র পশ্চিমবঙ্গের রিজিওনাল অফিসার রমেশ প্রসাদ সিং বলেন, “কৃষ্ণনগর থেকে বহরমপুর পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ হয়েছে। তার মধ্যে নদিয়ার চারটি পৃথক জায়গায় প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তার কাজ জমি সমস্যার জন্য থমকে আছে’’ তাঁর কথায়, ‘‘গত তিন-চার বছর ধরে আমরা অপেক্ষা করছি। জমি নিয়ে মামলা চলছে। আবার কখনও মানুষ জমির কম দামের কথা বলছে। জমি সমস্যা মিটে গেলেই ওই জায়গাগুলোয় কাজ শুরু হয়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন