ধাক্কা পুলিশের গাড়ির, মৃত এক

পরে জানা যায় পুলিশের গাড়িটি রানাঘাট জিআরপি থানার। রানাঘাট থানার পুলিশ জানিয়েছে, মোটরবাইক আরোহী লেন ভেঙে একটি পেট্রোল পাম্পে ঢোকার সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন। কারণ, দুটি গাড়িই ছিল রানাঘাট মুখি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০১:৫৭
Share:

জখম: দুর্ঘটনার পরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

দিনে দুপুরে এক মোটরবাইক আরোহীকে পিষে দিল পুলিশের গাড়ি। মঙ্গলবার রানাঘাটের হবিবপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ঘটনা। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন আরও একজন।

Advertisement

মৃতের নাম দীনবন্ধু সরকার (৫৫)। বাড়ি শান্তিপুর ফুলিয়ার বেলগড়িয়া গ্রামে। তাঁর স্ত্রী বনবাসী সরকার শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। ওই মোটরবাইকেই ছিলেন তাঁর বন্ধু রবি মণ্ডল। তিনি কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযোগ, মোটরবাইকে ধাক্কা মারার পরে পুলিশের গাড়িটি তীব্র গতিতে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরে এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান।

পরে জানা যায় পুলিশের গাড়িটি রানাঘাট জিআরপি থানার। রানাঘাট থানার পুলিশ জানিয়েছে, মোটরবাইক আরোহী লেন ভেঙে একটি পেট্রোল পাম্পে ঢোকার সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন। কারণ, দুটি গাড়িই ছিল রানাঘাট মুখি। ফলে লেন ভাঙার প্রশ্নই উঠছে না। পুলিশের গাড়ির চালককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন দীনবন্ধুবাবুর ছেলে সুদীপ্ত সরকার।

Advertisement

সুদীপ্ত জানান, এ দিন দুপুরে মোটরবাইকে করে তাঁর বাবা রবিবাবুকে সঙ্গে নিয়ে রানাঘাট আদালতে কাজে আসছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী রাজেশ পাত্র জানান, হবিববপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি পাম্পে ঢুকছিল মোটরবাইকটি। সেটির গতিও কম ছিল। পাম্পে ঢোকার মুখে একটি দ্রুত গতির টাটা সুমো মোটরবাইকটিকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। গাড়ির ধাক্কায় রাস্তার ধারে ছিটকে পড়েন দুই আরোহী। রাজেশবাবু বলেন, ‘‘গাড়িটির সামনে পিছনে পুলিশ লেখা ছিল। আমরা গাড়িটিকে থামানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সেটি আমাদেরকেই চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।’’

ধাক্কা মারার পরে আহতদের হাসপাতালে না নিয়ে পুলিশের গাড়িটি পালিয়ে যাওয়ায় বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়রা একটি অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে জখম দু’জনকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় দীনবন্ধুবাবুর। রবিবাবুর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাঁকে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।

কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রানাঘাট থানার পুলিশ। খোঁজখবর করে তারা জানতে পারে, টাটাসুমো গাড়িটি রানাঘাট জিআরপি থানার। বর্তমানে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রচুর ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে। ফলে গাড়িটিকে সহজেই চিহ্নিত করা যেত। পুলিশ জানিয়েছে, ওই গাড়িটিও পাম্পে তেল ভরাতে গিয়েছিল। গাড়িতে কেবল চালকই ছিল। অন্য কোনও পুলিশ কর্মী ছিলেন না। মোটরবাইকটি লেন ভেঙে গাড়িটির সামনে চলে আসায় দুর্ঘটনা ঘটে। সুদীপ্ত অবশ্য প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘মোটরবাইকের লেন ভাঙার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ পুলিশের গাড়িটি একই লেনে ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন