প্রৌঢ়া খুনে ধন্দে পুলিশ

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয়। তাঁর মোবাইল ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সুতি শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩৯
Share:

তাষনারি বেওয়া।

তাঁর মোবাইলে কেউ এক জন ফোন করেছিেলন। আর সেই ফোন পেয়েই তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার বিকেলের ওই ঘটনার ঘণ্টা দুয়েক পরেই বাড়ি থেকে মাইল খানেক দূরে সুতির বহুতালি গ্রামের মাঠ থেকে দেহ মিলল তাষনারি বেওয়ার (৫০)। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, শ্বাসরোধ করে ওই প্রৌঢ়াকে খুন করা হয়েছে।

Advertisement

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয়। তাঁর মোবাইল ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

তাষনারির সঙ্গেই থাকেন মেয়ে রিম্পা বিবি ও রিম্পার দুই ছেলে। তাসনারির ছোট ছেলে চেন্নাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বড় ছেলে বুলবুল খাঁ ভিন্‌রাজ্যে কাজ করেন। তিনি অবশ্য বাড়ি ফিরেছেন রবিবার বিকেলে। রিম্পা ও বুলবুল দু’জনেরই অভিযোগ, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তাষনারিকে।

Advertisement

বীরভূম ও ঝাড়খণ্ড সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম বহুতালির সাঁকোপাড়াপল্লির বাসিন্দা তাষনারি বিয়ের ঘটকালি করতেন। সেই কাজের সূত্রে এলাকায় তাঁর পরিচিতিও ছিল ভাল। তাঁর স্বামী মারা যান বছর দেড়েক আগে। তার পর থেকে এই পেশায় আরও বেশি করে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

মেয়ে রিম্পা বলছেন, ‘‘এলাকায় বহু ছেলেমেয়ের বিয়ে দিয়েছে মা। ঘটকালির কারণেই মােয়র সঙ্গে সবসময় মোবাইল থাকত। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ মা বাড়িতে ছিল। তখনই মায়ের পরিচিত কারও একটা ফোন আসে। সেই ফোন পেয়েই ‘এখনই চলে আসব’ বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।’’ কিন্তু সন্ধ্যে ৭টা বেজে গেলেও তাষনারি বাড়ি ফেরেননি। সাড়ে ৭টা নাগাদ বাড়ির লোকজন খবর পান, মাঠের মধ্যে পড়ে আছে তাঁর দেহ।

তাষনারির ভাইপো সাদ্দাম শেখ বলেন, “অন্ধকারে মাঠের মধ্যে কাকিমার দেহ পড়ে ছিল। রাতে হয়তো কেউ জানতেও পারত না। কিন্তু কাকিমার মোবাইলটা পড়ে ছিল পাশেই। সেই মোবাইলের রিংটোনের শব্দেই আশপাশের লোকজন ছুটে যান সেখানে। বেশ কিছুটা দূরে পড়েছিল চটি জোড়াও।” এরপরেই পাশের গ্রামের পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে।

তাষনারির বড় ছেলে বুলবুল খাঁ বলছেন, ‘‘ঘটকালির সুবাদে এলাকায় অনেকের সঙ্গেই মায়ের জানাশোনা ছিল এলাকায়। কিন্তু কার ফোন পেয়ে মা বেরিয়ে গিয়েছিল তা এখনও জানি না। মায়ের ফোনটি পুলিশ নিয়ে গিয়েছে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় অনেকের সঙ্গেই মায়ের দেখা ও কথা হয়েছে। যে ভাবে দেহ পড়েছিল তাতে মাকে খুনই করা হয়েছে।’’ গ্রামবাসীদেরও সন্দেহ, খুন হয়েছেন তাষনারি। কিন্তু পুলিশ কিংবা গ্রামবাসী কারও কাছেই খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন