হুমায়ুনের সঙ্গেই যাত্রী সেজে বাসে ওঠে পুলিশ

পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাসটি ধর্মতলা, সাঁতরাগাছি হয়ে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে। ডানকুনি হয়ে জিটি রোড ধরে বাস চলল বর্ধমানের দিকে। বাসে উঠে হুমায়ুনকে সন্দেহ হলেও পুলিশ অফিসাররা কিছু বুঝতে দেননি।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৬
Share:

কাকভোর থেকে হাওড়া স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের ‘স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ’ এর দু’জন পুলিশ অফিসার। অপেক্ষায় ছিল মালদহের কালিয়াচকের অস্ত্র কারবারি হুমায়ুন শেখও। ঠিক সেই সময় বিহারের জামালপুর থেকে আসা ট্রেন থেকে নেমে পড়ে মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারিও। স্টেশনের শৌচালয়ে সেই ব্যাগ হাতবদল হয়। অস্ত্রভর্তি ব্যাগ নিয়ে স্টেশন থেকে বেরিয়ে বাসে ধর্মতলা পৌঁছয় হুমায়ুন। পুরো বিষয়টি ফোনে জানতে পেরে শনিবার সকালে হাওড়া স্টেশন থেকে তার পিছু নিয়েছিল দুই পুলিশ অফিসার। হুমায়ুনের ফোন ‘ট্র্যাক’ করে এগোতে থাকেন তাঁরা। ধর্মতলা থেকে ওমরপুরগামী বাসে অস্ত্র কারবারির সঙ্গে সঙ্গেই বাসে ওঠে সাদা পোশাকের পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাসটি ধর্মতলা, সাঁতরাগাছি হয়ে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে। ডানকুনি হয়ে জিটি রোড ধরে বাস চলল বর্ধমানের দিকে। বাসে উঠে হুমায়ুনকে সন্দেহ হলেও পুলিশ অফিসাররা কিছু বুঝতে দেননি।

আগে থেকেই মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের নির্দেশ ছিল, বাস জেলায় ঢুকলে তবেই তল্লাশি শুরু হবে। সেই মতো বাসে থেকে নজরদারি চালাচ্ছিলেন জেলা পুলিশের বিশেষ দলের ওই দুই অফিসার। বাসের চালকের ঠিক পিছনের আসনে বসেছিল হুমায়ুন। আর চালকের আসনের পিছনে অস্ত্রভর্তি লাল রঙের ব্যাগ রেখেছিল সে। কিন্তু বাসে সন্দেহজনক ব্যাগ দেখতে না পেয়ে রীতিমতো দুশ্চিন্তায়ও ছিলেন ওই দুই আধিকারিক।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘অস্ত্র-সহ ওই কারবারি উত্তরবঙ্গগামী বাসে যে রয়েছে তা নিশ্চিত হওয়ার পরে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশে তৎপরতা বেড়ে যায়। জেলায় বাস ঢুকলেই তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো শনিবার বিকালে বড়ঞার করালিতলো মোড়ে অপেক্ষায় ছিল বড়ঞা থানার পুলিশ ও জেলা পুলিশের ‘স্পেশ্যাল অপারেশ গ্রুপ’এর (এসওজির) সদস্যেরা। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বড়ঞার করালিতলা মোড়ে বাসে পৌঁছতেই ঘিরে ধরে পুলিশ। বাস থেকে সমস্ত যাত্রীকে নামিয়ে একে একে তল্লাশিও শুরু হয়।

চালকের আসনের পিছনে বসে থাকা হুমায়ুনকেও নামানো হয়। চালকের আসনের পিছনের আসন থেকে অস্ত্রভর্তি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ধরপাকড়ের জেরে রুটবদল করলেও শেষরক্ষা হয়নি মালদহের অস্ত্রকারবারি হুমায়ুন শেখের।

রবিবার থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে হুমায়ুন। বেআইনি অস্ত্র কারবারের আরও হদিশ পেতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার জানান, ৩০ জানুয়ারি মালদহ ও মুঙ্গেরের দুই অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করে হুমায়ুনের খোঁজ মেলে। তার পর থেকেই তার উপর নজর রাখছিল পুলিশ। আর সেই নজরদারি ও তৎপরতার কারণেই জালে পড়ে হুমায়ুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন