কারা ছড়াচ্ছে গুজব, তালিকা পুলিশের

কখনও কালনা, কখনও রানাঘাট, কখনও গাইঘাটা। সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক প্রচার এবং গুজবের জেরে অঘটন ঘটেই চলেছে। বার বার অশান্ত হচ্ছে এলাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৯
Share:

অবরোধ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে।— নিজস্ব চিত্র

কখনও কালনা, কখনও রানাঘাট, কখনও গাইঘাটা। সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক প্রচার এবং গুজবের জেরে অঘটন ঘটেই চলেছে। বার বার অশান্ত হচ্ছে এলাকা।

Advertisement

শুক্রবার কালনায় গণপিটুনি একজনের মৃত্যু তো হয়েইছে। সেই ঘটনায় জখম সমীর সরকারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বর্তমানে তিনি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। শনিবার হুগলির বলাগড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে কল্যাণীর দুই মহিলাকে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁরা কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।

তবে পুলিশ ভুয়ো খবরের গুজব ছড়ানোর ঘটনাকে মোটেই হাল্কাভাবে নিচ্ছে না। পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, গুজব ছড়ানোর ঘটনায় সামান্য সংযোগ পাওয়া গেলেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখছে, ফেসবুকে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে, চুরি-ডাকাতির ভুয়ো খবর, এলাকায় জঙ্গি ঢুকে পড়ার খবর ছড়়ানো হচ্ছে।

Advertisement

তার ফলে এলাকায় এলাকায় বাড়ছে গণপিটুনির ঘটনা। কিন্তু, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সব ছড়াচ্ছে কারা? এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই সেই ‘মেসেজ’ বা ‘পোস্ট’ পেয়ে তা অন্যদের ছড়িয়েছেন।

লাঠি চালাল র‌্যাফ।— নিজস্ব চিত্র

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে জেলার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়রিং কলেজের এক পড়ুয়া নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এই ধরণের বেশ কিছু মেসেজ তৈরি করে ছড়িয়েছেন। সেই ছাত্রের গতিবিধির উপরে নজর রাখছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, যে কোনও সময় গ্রেফতার করা হবে ওই ছাত্রকে। যারা গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের একটি তালিকাও পুলিস তৈরি করছে।

পুলিশ সুপার শিষরাম ঝাঝারিয়া জানিয়েছেন, পুলিশ এই ধরণের অপরাধ হালকাভাবে নিচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছি। তাদের গ্রেফতার করা হবে।’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে চাকদহ থানার পুলিশ শুক্রবার রাতে শহর থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের নাম বাপি ঘোষ এবং বিশ্বজিৎ সাহা। বাপির বাড়ি রবীন্দ্রনগর। বিশ্বজিৎ সুভাষনগরের বাসিন্দা। কল্যাণী আদালত দু’জনকেই পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এতদিন যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা কারওর না কারওর কাছ থেকে পেয়ে তা ছড়িয়েছে। তবে, বাপি নিজেই ফেসবুকে মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের গুজব ছড়িয়েছে। সঙ্গে উস্কানিমূলক বিভিন্ন কথাবার্তা। পুলিশ, সরকার এবং সংবাদমাধ্যের বিরুদ্ধেও বিষোদগার ছিল তার ‘পোস্ট’-এ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাপির এক ঘনিষ্ট আত্মীয় বিজেপি কর্মী। তাকেও বিজেপির মিছিল-মিটিঙে দেখা গিয়েছে। কেন সে এমন কাজ করল? নানা কথা বলে সে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে, সে নিজেই এই কাজ করেছে নাকি পিছনে অন্য কেউ রয়েছে।

জেলা বিজেপির মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদার বলেন, ‘‘বাপির দাদা অনেক আগে আমাদের দলের সঙ্গে জড়িত ছিল। বর্তমানে সে অন্য একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তবে বাপির সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন