কে খুনি, আঁধারে পুলিশ

পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার সৈকত রানাঘাট ও শান্তিপুর-সহ মোট চার জায়গা থেকে টাকা সংগ্রহ করে কৃষ্ণনগরে ফিরছিলেন। শান্তিপুরের মতিগঞ্জমোড়ে ইমরান মণ্ডলের থেকে শেষ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১৮
Share:

সন্তানহারা: গুলিতে নিহত সৈকতের শোকে ভেঙে পড়েছেন মা। ছবি: প্রণব দেবনাথ

গাড়ির অর্থ লগ্নি সংস্থার কর্মী সৈকত ঘোষ খুনের চব্বিশ ঘণ্টা পরেও খুনের কারণ হাতড়াচ্ছে পুলিশ। আততায়ীরাও এখনও নাগালের বাইরে। সম্প্রতি এই শহরেই এক চিকিৎসকের বাড়ির সামনে গুলি করে খুন করা হয়েছিল এক ওষুধ সংস্থার দালালকে। তার পর কয়েক মাস কাটতে না কাটতে কৃষ্ণনগরেই প্রকাশ্য রাস্তায় খুন হলেন সৈকত।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার সৈকত রানাঘাট ও শান্তিপুর-সহ মোট চার জায়গা থেকে টাকা সংগ্রহ করে কৃষ্ণনগরে ফিরছিলেন। শান্তিপুরের মতিগঞ্জমোড়ে ইমরান মণ্ডলের থেকে শেষ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। তিনি যে সংস্থায় কাজ করতেন সেখানকার কর্তারা জানিয়েছেন, শান্তিপুর থেকে টাকা সংগ্রহের রিপোর্ট সৈকত দিয়েছিলেন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ। তার পর কৃষ্ণনগরের দিকে রওনা হয়েছিলেন।

খুনের ঘটনা ঘটে বেলা পাঁচটা নাগাদ। কৃষ্ণনগর থেকে কালীরহাটের দূরত্ব ১৩-১৪ কিলোমিটার। এইটুকু রাস্তা আসতে কোনও ভাবেই এত সময় লাগার কথা নয়। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি মাঝখানে কোথায় থেমেছিলেন? ঘটনাস্থলের কাছে একটি গাড়ির শো-রুমের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সে দিনের বেশ কিছুটা দৃশ্য। আলো কমে আসায় স্পষ্ট ভাবে ছবি বোঝা না গেলেও দেখা যাচ্ছে, পিছন থেকে একটি মটরবাইক এসে সৈকতকে বাঁ দিকে চাপতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রাখতে না-পেরে তিনি রাস্তায় উল্টে পড়েন। উঠে বসার চেষ্টা করতে গিয়ে আবার পড়ে যান। যে বাইকটি চাপছিল তাতে দু’জন ছিল। তাদের এক জন তখন টাকার ব্যাগটা নিয়ে নেয়। তার পর বাইক কৃষ্ণনগরের দিকে চলে যায়। গুলি করার দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েনি। প্রশ্ন হল, আততায়ীরা কি শান্তিপুর থেকে সৈকতের পিছু নিয়েছিল নাকি মাঝ পথে তার পিছু নেয়? অপেক্ষাকৃত জনবহুল এলাকায় তারা খুন করতে গেল কেন?

Advertisement

তারা কি জানত যে সৈকত টাকা নিয়ে কৃষ্ণনগরে ফিরছে? যাঁরা লগ্নি সংস্থার টাকা সংগ্রহ করেন তাঁরা কোথায় কখন যান সেটা সাধারণত বাইরের কারও জানার কথা নয়। তা হলে কি খুনিরা সৈকতের পরিচিত কেউ? নাকি সৈকতের গতিবিধি জানতেন এমন কেউ খুনিদের সব খবর দিয়েছিলেন? পুলিশ এখনও এ সব প্রশ্নের জবাব পায়নি।

সৈকতের বাবা মহেন্দ্রনাথ ঘোষ ছিলেন বাসচালক। টানাটানির সংসার। মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে সৈকত টেলিফোন বুথে মাত্র তিনশো টাকা বেতনে কাজ নিয়েছিলেন। সেখান থেকেই পড়ার খরচ তুলতেন। অনেক পরিশ্রমের পর সাড়ে তিন বছর আগে এই লগ্নি সংস্থায় যোগ দেন। গত বছরই তাঁর পদোন্নতি হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন