হানা দিয়ে মিলল চাল-চিনি

এক রেশন দোকানে হানা দিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশো বস্তা আটা, চাল, গম ও চিনি আটক করলেন খাদ্য দফতরের কর্তারা। আটক করা হয়েছে ২০০০ লিটার কেরোসিনও। সমস্ত সামগ্রীই হিসেব বহির্ভূত বলে জানিয়েছেন জঙ্গিপুর মহকুমার খাদ্য ও সরবরাহ আধিকারিক প্রশান্ত মহাপাত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

উদ্ধার: মির্জাপুরে। নিজস্ব চিত্র

নাগাড়ে অভিযোগ আসছিল। সত্যতা যাচাই করতে একদিন আচমকা হানা। আর তাতেই ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ল বেড়াল।

Advertisement

এক রেশন দোকানে হানা দিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশো বস্তা আটা, চাল, গম ও চিনি আটক করলেন খাদ্য দফতরের কর্তারা। আটক করা হয়েছে ২০০০ লিটার কেরোসিনও। সমস্ত সামগ্রীই হিসেব বহির্ভূত বলে জানিয়েছেন জঙ্গিপুর মহকুমার খাদ্য ও সরবরাহ আধিকারিক প্রশান্ত মহাপাত্র। তিনি জানান, রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লকের মির্জাপুর গ্রামের ওই রেশন দোকানদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনিবার রেশন দোকানটি বন্ধ ছিল। তা সত্ত্বেও মহকুমা খাদ্য দফতরের কর্তা এক বিভাগীয় পরিদর্শককে সঙ্গে নিয়ে ভর দুপুরে হানা দেন। তল্লাশি চালিয়ে থরে থরে সাজানো চাল, গম, আটা, চিনি বোঝাই বস্তা মেলে। আটক করা হয় ১২৩ বস্তা আটা, ৫০ বস্তা চাল, ১৮৮ বস্তা গম ও কয়েক বস্তা চিনি। পাশেই মেলে ২০০ লিটারের ১০ ব্যারেল কেরোসিন।

Advertisement

রেশন দোকানে সরকারি অফিসারেরা হানা দিয়েছেন খবর পেয়েই কয়েকশো গ্রামবাসী দোকানের সামনে জড়ো হন। দোকানদারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি বরাদ্দ খাদ্য সামগ্রী, কেরোসিন কিছুই তাঁদের দেওয়া হয় না। মাসের পর মাস ধরে এ ভাবেই চলছে। জুলাই মাসেও কোনও সামগ্রী তাঁরা পাননি।

গ্রামবাসী দীনবন্ধু দাস বলেন, “বহুবার অভিযোগ করা হয়েছে প্রশাসনের কাছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

আরও এক গ্রামবাসী উজ্জ্বল সিংহের কথায়, “দোকানে গেলেই শুনতে হয় কেরোসিন আসেনি। অনেক বাড়িতে কেরোসিনের অভাবে আলো জ্বলে না। বাইরে চড়া দাম কেরোসিনের। অথচ ডিলারের বাড়িতে ২০০০ লিটার কেরোসিন কী ভাবে মজুত থাকে?’’ প্রশান্তবাবু জানান, রেশন দোকানের খাতা পত্র মিলিয়ে দেখা গেছে জুলাই মাসেও সমস্ত বরাদ্দ মালপত্র পেয়ে তা বিলিবণ্টনের হিসেব দেখিয়েছেন তিনি। অথচ গ্রাহকেরা বলছেন তাঁরা কোনও রেশন পাননি।

ওই রেশন দোকানের মালিক জয়দেব ভট্টাচার্য অ্যান্ড সন্স। তাদের নিজেদের বাড়িতেই এই রেশন দোকান। জয়দেববাবু মারা যাওয়ার পর দোকানটি চালান ছেলে দেবব্রত ভট্টাচার্য-সহ অন্য ছেলেরা।

দেবব্রত ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, ‘‘রেশন না দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যে। আর আটক হওয়া সামগ্রী সবই বৈধ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন