Probe

বিজয়ের মৃত্যু, তদন্তের শ্লথ গতি নিয়ে প্রশ্ন

বিজয়ের কাকিমা অনীমা শীল বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা, বিজয়কে খুন করা হয়েছে। কিন্তু ওর মৃত্যু নিয়ে দুই রাজনৈতিক দলই রাজনীতি করল। অথচ, মৃত্যুর কিনারাই এখনও হল না।’’

Advertisement

মনিরুল শেখ

গয়েশপুর শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২০ ০৫:১৩
Share:

ফাইল চিত্র।

রাজনৈতিক তর্কবিতর্ক চরম উঠলেও গয়েশপুরে বিজয় শীলের মৃত্যুর কিনারা পুলিশ তিন দিনেও করে উঠতে পারেনি।। ঘটনার পরেই নিহতের স্ত্রী কমলী শীল এলাকার এক দুষ্কৃতী এ তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, তার ভিত্তিতে এফআইআর করা হয়েছে।

Advertisement

রবিবার সকালে গয়েশপুরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিজয় শীলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার পরেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোড় শুরু হয়। দু’পক্ষই বিজয়কে নিজেদের লোক বলে দাবি করে সাধারণ মানুষের সমবেদনা পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। মৃত ব্যক্তিতে নিয়ে এই টানাটানিতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ বিজয়ের পরিবার-পরিজনেরা।

নিহতের পরিবার প্রশ্ন তুলেছে, লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরেও কেন দুই অভিযুক্তকে আটক বা গ্রেফতার করা হচ্ছে না? নিহতের স্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর সঙ্গে ওই দু’জনের ঝামেলা হয়েছিল। বিজয় তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, ওই দু’জন তাঁকে হুমতি দিচ্ছে। বিজয়ের কাকিমা অনীমা শীল বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা, বিজয়কে খুন করা হয়েছে। কিন্তু ওর মৃত্যু নিয়ে দুই রাজনৈতিক দলই রাজনীতি করল। অথচ, মৃত্যুর কিনারাই এখনও হল না।’’

Advertisement

কমলীদেবীর কথায়, ‘‘যে দু’জনের নাম আমি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছি আমি নিশ্চিত যে, আমার স্বামীর মৃত্যুতে ওদের হাত রয়েছে। ওরা এলাকার পরিচিত দুষ্কৃতী। তবুও পুলিশ ওদের ধরছে না।’’ বিজেপির গয়েশপুর শহর মণ্ডলের সভাপতি তথা দলের দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সদস্য চঞ্চল পালের উক্তি, ‘‘পুলিশ ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে। যে দুই ভাই-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে তারা তৃণমূলের সমর্থনেই এলাকায় গুন্ডাগিরি করে। ফলে পুলিশ ওদের ধরতে চাইছে না।’’

আবার ঘটনার পর থেকে একাধিক বার বিজয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন গয়েশপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলছেন,‘‘আমি চাই, পুলিশ দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত করুক। এ নিয়ে কালক্ষেপ করা ঠিক নয়।’’

নিহতকে নিজেদের কর্মী বা সমর্থক বলে দাবি করে সোমবার বিজেপি ১২ ঘণ্টার কল্যাণী বন‌্ধ-এর ডাক দেয়। তা সফল না হওয়ার জন্য দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। কল্যাণীর একাধিক বিজেপি নেতার মত, পরিকল্পনামাফিক বন‌্ধ ডাকা হয়নি। বনধের প্রচারও তেমন ভাবে হয়নি। ফলে এমন ভাবে মুখ পুড়ল দলের। সোমবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলোন, বিজয় বর্তমানে রাজনীতি করতেন না। তা সত্ত্বেও বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য মানবেন্দ্রনাথ রায় তাঁর বক্তব্যে অনড়। তাঁর দাবি, ‘‘বিজয় আমাদেরই লোক। কিন্তু তৃণমূলের ভয়ে ওঁর পরিবার বয়ান বদলাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন