ক্লাস-ঘরে পাখা নেই, তালাবন্দি শিক্ষকেরা

ক্লাসরুমে পাখা লাগানোর সঙ্গে জুড়ল নতুন দাবি। নিয়মিত ক্লাস, ছাত্রদের শৌচাগার-সহ একাধিক দাবিতে এ দিন শিক্ষকদের দীর্ঘক্ষণ তালাবন্ধ করে রাখা হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০৮:২০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

দীর্ঘদিনের আবেদন-নিবেদনে ক্লাসরুমে লাগেনি পাখা। প্রতিবাদে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা অন্য শ্রেণিকক্ষের পাখা বন্ধ করতেই গোল বাঁধে। দু’পক্ষের ছাত্রদের হাতাহাতিতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, স্কুল ছুটি দিয়ে সামলাতে হয় পরিস্থিতি। বুধবারের এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে বৃহস্পতিবারে ফের বিপত্তি মুর্শিদাবাদ থানার গুধিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

Advertisement

ক্লাসরুমে পাখা লাগানোর সঙ্গে জুড়ল নতুন দাবি। নিয়মিত ক্লাস, ছাত্রদের শৌচাগার-সহ একাধিক দাবিতে এ দিন শিক্ষকদের দীর্ঘক্ষণ তালাবন্ধ করে রাখা হল। পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগ দিল অভিভাবকেরাও। শেষ পর্যন্ত দাবি পূরণের দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়ে মুক্ত হলেন শিক্ষকেরা। অভিভাবকেরা অবশ্য হুমকি দিয়ে রাখলেন, দাবি পূরণ না হলে ফের তালাবন্দি করা হবে শিক্ষকদের।

এই স্কুলে উচ্চমাধ্যমিকে কেবল কলা বিভাগ রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৮০০। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৩৬ জন। একাদশ শ্রেণির একটি ঘরে পড়ুয়া বসে ১৮০ জন। পাখা মাত্র দু’টি। দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া ১০৫ জন। পাখা ৪টি। নীচের ক্লাসগুলিতে পাখার সংখ্যা অবশ্য তুলনায় বেশি। এই দুই ক্লাসের পড়ুয়াদের অভিযোগ, গরমে পড়ায় মনসংযোগ করতে খুব সমস্যা হয়। সেই জন্যই দীর্ঘদিন ধরে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে বাড়তি কিছু পাখা লাগানোর জন্য বলেছি। আমাদের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, নতুন স্টাফরুম তৈরি হলে সেই ঘরটি একাদশ শ্রেণির জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তা আর হচ্ছে না।

Advertisement

স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা অন্য শ্রেণিকক্ষের পাখাগুলি বন্ধ করে দেয়। অন্য ক্লাসের পড়ুয়ারা বাধা দিলে বেঁধে যায় হাতাহাতি। স্কুল চত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় অন্যান্য পড়ুয়ারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।

সে দিন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও বৃহস্পতিবার স্কুলের শুরুতেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘরে তালাবন্ধ করে করে দেয় অভিভাবক ও পড়ুয়ারা। অভিভাবকদের অভিযোগ, ‘‘৩৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার জন্য স্টাফরুমে রয়েছে ১১টি পাখা। আর ১৮০ জন ছাত্র-ছাত্রীর জন্য মাত্র দু’টি পাখা। শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রায়ই স্কুলে আসেন না। ছাত্রদের কোনও শৌচাগার নেই।

প্রধান শিক্ষক আশিষ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘১১টি শিক্ষক পদ শূন্য। অনেকে ছুটিতে থাকেন। ফলে, প্রায় দিনই কিছু ক্লাসের পঠনপাঠন না হওয়া নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।’’ মুর্শিদাবাদ চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক তাজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। তার পরেই সমস্যা মেটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন