ফোনেও এল না ‘নিশ্চয় যান’, মৃত্যু প্রসূতির

হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন সাবিনুর নেহার বিবি (২১) নামে এক প্রসুতি। তাঁর বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিশ্চয় যানের চালককে ফোন করেন। অভিযোগ, সাড়া দেননি ওই চালক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১২
Share:

হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন সাবিনুর নেহার বিবি (২১) নামে এক প্রসুতি। তাঁর বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিশ্চয় যানের চালককে ফোন করেন। অভিযোগ, সাড়া দেননি ওই চালক। ফলে, টোটো ও বাসে চাপিয়ে ওই মহিলাকে লালগোলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। হাসপাতালে পৌঁছনোর মিনিট চল্লিশেক পর তিনি মারা যান। ওই ঘটনায় মৃতার পরিবারের লোকজন নিশ্চয়যানের চালকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

নিশ্চয় যানের চালকদের বিরুদ্ধে এর আগেও এমন অভিযোগ উঠেছে। দিনকয়েক আগেই জঙ্গিপুরের এক সদ্যোজাতকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অস্বীকার করে চালক। পরে ওই শিশুটির মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার লালগোলায় এমনটা ঘটল।

এই ঘটনায় ওই প্রসুতির বাড়ির লোকজন নিশ্চয় যানের মালিক নাজিম শেখ-সহ তার তিন সঙ্গীর বিরুদ্ধে বুধবার লালগোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মৃতার স্বামী কলিম শেখের দাবি, ‘‘নিশ্চয় যানের গাফিলতিতে আমার স্ত্রী মারা গেলেন।’’

Advertisement

সোমবার সকালে লালগোলার শীতেশনগর গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। তাঁকে কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি স্বাভাবিক ভাবে সন্তান প্রসব করেন। পরদিন, মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ মা ও শিশুকে ছুটি দেওয়া হয়। নিশ্চয়যানে চেপে তাঁরা গ্রামে ফেরেন। বাড়ি ফেরার মিনিট পনেরো পর থেকেই সাবিনুর পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। বাড়ির লোকজন সাবিনুরকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন।

সাবিনুরের স্বামী বলেন, ‘‘ওই নিশ্চয়যানের মালিককে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানাই। হাসপাতালে যাওয়ার জন্য গাড়ি আনতে বলি। কিন্তু নিশ্চয় যানের মালিক আসতে চাননি।’’ শেষমেশ টুকটুক করে ওই মহিলাকে ভগবানগোলার উড়াহারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থেকে একটি ছোট গাড়িতে চাপিয়ে তাঁকে কৃষ্ণপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে বেজে গিয়েছে দুপুর ২টো। মৃতার কাকা রবিউল আলম বলেন, ‘‘নিশ্চয় যানের না আসায় হাসাপাতালে পৌঁছতে অনেকটা দেরি হয়েছিল। তার উপরে হাসপাতালে প্রায় আধ ঘণ্টা সাবিনুরকে ফেলে রাখা হয়। চিকিৎসকেরা তাঁকে দ্রুত দেখেননি। এর ফলেই মৃত্যু।’’

বিএমওএইচ সৌম্য সাহা বলেন, ‘‘সুস্থ অবস্থায় ওই প্রসুতিকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তারপর কী হয়েছিল বলতে পারব না। দ্বিতীয় বার ভর্তি করানোর মিনিট দশেক পরই তিনি মারা যান। গাফিলতির কোনও প্রশ্নই নেই।’’ নিশ্চয় যানের মালিক নাজিম শেখ বলেন, ‘‘ওঁরা আমাকে রোগীর ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য দেননি। ফলে আমি যাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন