আশ্বিনের বৃষ্টিতে আমনে ক্ষতির আশঙ্কা দু’জেলায়

বর্ষার শুরুতে ভাল বৃষ্টিতে ধানের লাভ হলেও পরের দিকে অতি বর্ষণ শুরু হয়। ক্ষতির সেই শুরু। আমন বোনার সঠিক সময় জুলাই মাস।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

ক্ষতি: ধানের এমনই অবস্থা হয়েছে। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

প্রায় পাকা আমনে মই দিল আশ্বিনের অকাল বৃষ্টি। দিন তিনেকের টানা বৃষ্টি আর প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে নুইয়ে পড়ল বিঘের পর বিঘের স্বল্পকালীন মেয়াদের আমনের পুষ্ট গাছ। কৃষি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আর দিন কয়েক কেটে গেলেই জলদি আমন ধান কাটা যেত।

Advertisement

এই যদি নদিয়ার সমস্যা হয়, তা হলে মুর্শিদাবাদে আমন চাষের সমস্যা আরও জটিল। ঝড়-বৃষ্টির দাপটে কিছু ধান কোনও রকমে রক্ষা পেলেও সেখানে ধসা রোগের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিঘার পর বিঘা ধান।

বর্ষার শুরুতে ভাল বৃষ্টিতে ধানের লাভ হলেও পরের দিকে অতি বর্ষণ শুরু হয়। ক্ষতির সেই শুরু। আমন বোনার সঠিক সময় জুলাই মাস। কিন্তু তখনও অস্বাভাবিক বৃষ্টির জেরে মুর্শিদাবাদের কান্দি, হিজল, ভরতপুর, বড়ঞার মতো মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকার আমন চাষিরা চরম সমস্যার মুখোমুখি হন। জেলা কৃষি দফতরের কথায়, ‘‘এবার আমনের মরসুম শুরুর মুখে জেলা জুড়ে অতি ভারি বর্ষণের জেরে বহু জমিতে জল জমে গিয়েছিল। পরে বৃষ্টি কমলেও নিচু জমি থেকে জল না নামায় ওই সমস্ত জমিতে আমনের চারা বসাতে পারেননি কৃষকেরা।’’

Advertisement

তবে ক্ষতির পরিমাণ তুলনায় কম নদিয়ায়। আবার নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ লাগোয়া বর্ধমানের বিস্তীর্ণ অংশে এই সমস্যায় আমন চাষিরা। এ সব সামলে যাঁরা আমন ধান বুনেছেন, অকাল বর্ষণে এ বার তাঁদের কপালে ভাঁজ। কারণ, অসময়ের বর্ষায় আমনে ছত্রাক ঘটিত ধসা রোগ ছড়াচ্ছে। তাতে ফলন কমার আশঙ্কায় ভুগছেন চাষিরা।

বর্ধমানের-সহ কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ জানান, ফসল পাকার সময়ের নিরিখে তিন রকমের আমনের চাষ হয়। তার মধ্যে জলদি আমন ১১০-১১৫ দিনের মধ্যে পেকে যায়। এখনই জলদি আমন কাটার সময়। এমন সময়ে বৃষ্টিতে জলদি আমনের বেশ ক্ষতি হল। চাষিরা জানাচ্ছেন জলদি আমন তুলে রবি শস্য, আলু, পিঁয়াজ, ডাল শস্য প্রভৃতি চাষ করা হয়। কিন্তু বর্ষা এখনও বিদায় না নেওয়ায় চিন্তায় চাষিরা।

সাধারণ ভাবে পুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পর তেমন ভাবে মেঘ থাকে না। কিন্তু এ বার গোটা পুজো জুড়ে চলেছে বৃষ্টির দাপাদাপি। এখনও বর্ষা বিদায়ের লক্ষণ নেই। এই আবহাওয়া আমন চাষের প্রতিকুল। ফলন্ত গাছ ধসা রোগের শিকার হচ্ছে। হিসাব মতো এখন ধানের শিষ গঠনের সময়। দিনে উজ্জ্বল রোদ আর রাতে শিশির, সঙ্গে শীতল বাতাস এই সময় আমনের অনুকূল। কিন্ত, এ বার আবহাওয়া ঠিক উল্টো। এই খামখেয়ালি আবহাওয়ায় ধান গাছের গোড়াপচা ও ধসা রোগের সংক্রমণ বাড়ছে। মুর্শিদাবাদ জেলার কৃষি আধিকারিক তাপস কুণ্ডু বলেন, “মূলত জোলো আবহাওয়ার জন্য এ রোগ হয়। কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগের নাম ‘সিড-বাইট’। চাষিরা কৃষি দফতরে গিয়ে যোগাযোগ করলে সমাধানের সূত্র পেয়ে যাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন