টাকা নেই। ফাঁকা ব্যাঙ্ক। নিজস্ব চিত্র।
ব্যাঙ্কে চাহিদা মতো টাকা মিলছে না। অধিকাংশ এটিএম কাউন্টারেও ঝাঁপ নামানো। আবার খোলা থাকলেও হয় লিঙ্ক নেই, নাহলে শুধুই দু’হাজার টাকার নোট।
নোট বাতিলের পর কেটে গিয়েছে এক মাসেরও বেশি সময়। তারপরেও পরিস্থিতির তেমন কোনও বদল হয়নি। টাকার সরবরাহ না থাকায় সব থেকে বেশি ভুগছেন বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরা। নতিডাঙার ক্ষুব্ধ এক গ্রাহক দেবব্রত চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘টাকা না পেয়ে সমস্যায় রয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও চাষিরা। ব্যাঙ্ক থেকে কখনও এক হাজার বা তারও কম টাকা পাচ্ছি। এ ভাবে আর কতদিন চলবে?’’
নদিয়ার বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যনেজার সুব্রত পাল বলেন, “রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা অনুযায়ী এলাকার বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক থেকে আমাদের টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু সেই টাকা তারা দিতে পারছে না। জেলার ৬৭ টি গ্রামীণ ব্যাঙ্কেই খুব খারাপ অবস্থা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কে জানিয়ে কোনও ফল হছে না।”
অন্য দিকে, টাকার অভাবে ধুঁকছে নদিয়া-মুর্শিদাবাদের বহু এটিএম। রাস্তায় বেরোলে এখন একটাই প্রশ্ন, ‘‘দাদা, কোন এটিএমে টাকা আছে বলতে পারেন?’’ কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুর, বাহাদুরপুর থেকে বহরমপুর কিংবা জলঙ্গি থেকে বেলডাঙ্গা, হরিহরপাড়া সর্বত্রই প্রায় এক অবস্থা। ডোমকলে ১৫টি এটিএমের মধ্যে ৮টি এটিএম নোট বাতিলের পর থেকে পুরোপুরি বন্ধ। বাকি এটিএমগুলিতেও সব সময় টাকা থাকছে না। বেলডাঙাতেও প্রায় ১৫টি এটিএমের মধ্যে ৬-৭টি বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকছে। ডোমকলের ইকবাল হোসেন বলছেন, “আর কত দিন এ ভাবে চরকির মতো ঘুরতে হবে কে জানে!’’
নদিয়া জেলা লিড ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সুগত লাহিড়ি বলছেন, ‘‘পর্যাপ্ত টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কারণেই এমন সমস্যা।” আর মুর্শিদাবাদের লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অমিত সিংহ সমস্যার কথা কবুল করে বলছেন, ‘‘জেলার দশ থেকে পনেরো শতাংশ এটিএমে ঠিকঠাক টাকা মিলছে। টাকার জোগানে বিরাট ঘাটতি থাকাতেই এই অবস্থা।’’ কবে নাগাদ এই সমস্যা মিটবে? সে প্রশ্নের অবশ্য কোনও সদুত্তর মেলেনি।