দিনে দিনে গতি হারাচ্ছে গোবরনালা

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ইমরান শেখ। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন শুভাশিস সৈয়দ। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ইমরান শেখ। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন শুভাশিস সৈয়দ। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৭
Share:

নিকাশি নালা উপচে রাস্তায় উঠে এসেছে নোংরা জল। ভাকুড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র

• বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় পানীয় জলে মাত্রাতিরিক্ত হারে আর্সেনিক রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রতি বাড়িতে পাইপ লাইনের সাহায্যে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহ করা গেল না কেন?

Advertisement

নিজাইরুল ইসলাম, পঞ্চাননতলা

Advertisement

ভাগীরথী থেকে জল তুলে তা পরিশুদ্ধ করে বহরমপুরের ব্লকের একাংশে, হরিহরপাড়া ও বেলডাঙায় প্রতি বাড়িতে পানীয় জল সরবরাহের জন্য ২০০৬ সালে হরিদাসমাটি এলাকায় একটি জলপ্রকল্পের শিলান্যাস হয়। কিন্তু জলপ্রকল্পের জায়গা থেকে পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হলে জমি-জটিলতায় তা থমকে রয়েছে। এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেই মতো ২০১৬ সালে মে মাসে ওই জলপ্রকল্প চালু করার কথাও হয়। কিন্তু কী কারণে জানি না, এখনও পর্যন্ত ওই জলপ্রকল্প চালু করা যায়নি।

•বহরমপুর ব্লকে সংখ্যালঘু ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য ইংরেজি মাধ্যমের একটি মাদ্রাসা চালু হয়েছে। ওই স্কুল পঠনপাঠনের উপযোগী করে তোলা গেল না কেন?

মোসলেম খান, ডন বস্কো নগর

মুর্শিদাবাদ জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে বহরমপুর বানজেটিয়া এলাকায় সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর ইংরেজি মাধ্যমের মাদ্রাসা চালু করেছে। কিন্তু ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় বিশেষ করে পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় যে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করতে হলে পঞ্চায়েত সমিতিকে জানিয়ে করার কথা। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতিকে না জানিয়ে অনেক সরকারি দফতর সরাসরি কাজ করছে। ফলে সব তথ্য আমরা জানতে পারি না। পঞ্চায়েত সমিতিকে অন্ধকারে রেখে কাজ না করার দাবি জানালে তা অনেক সময়ে মানা হচ্ছে না।

•বহরমপুর শহরের নোংরা-আবর্জনা জল পঞ্চাননতলা মোড় থেকে ‘গোবরনালা’ খাল হয়ে ভাণ্ডারদহ বিলে পড়ছে। এখন ওই গোবরনালা সংস্কার না হওয়ায় ওই খাল বরাবর রাস্তায় দুর্গন্ধে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ভাণ্ডারদহ বিল ও চালতিয়া বিল সংস্কারেরও প্রয়োজন। পঞ্চায়েত সমিতির কি কোনও ভাবনা-চিন্তা রয়েছে?

পিয়ারুল ইসলাম, প্রফেসরপাড়া

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ওই খাল সংস্কারের চেষ্টা করা হবে। তবে ভাণ্ডারদহ ও চালতিয়া বিল অবিলম্বে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। সেক্ষেত্রে ওই দু’টি সংস্কারের জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ অথবা সেচ দফতরের কাছে সাহায্য চাওয়া হবে।

•বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন এলাকায় নিকাশি নালার সমস্যা রয়েছে।

হারাধন কর্মকার, চুঁয়াপুর

নিকাশি নালার সমস্যা রয়েছে জানি। তবে আর্থিক অনটনের জন্য কাজ করা যাচ্ছে না। তবে চুঁয়াপুরে নিকাশি সমস্যা মেটাতে গোবরনালা খাল এবং ভাকুড়ি লহর দিয়ে ওই জল বের করে দেওয়া যায় তার জন্য সংযোগকারী বড় নর্দমার পরিকল্পনা করতে হবে। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষে এখনই ওই কাজ করা সম্ভব নয়। চেষ্টা করব মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের মাধ্যমে যাতে ওই কাজ করা যায়।

•দীর্ঘ দিন ধরে খাস জমিতে বসবাস করলেও সেই সমস্ত মানুষ এখনও পাট্টা পাননি। কিন্তু কেন?

আবদুল সোভান শেখ, কাটাবাগান

খাস জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বণ্টন করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতি বোর্ড এক জনকেও পাট্টা দিতে পারেনি। বিভিন্ন খাস জমিতে যাঁরা বসবাস করছেন, তদন্তের পরে তার একটা তালিকা তৈরি করা হয়। সেই তালিকায় এমন অনেকের নাম রয়েছে, যাঁরা পাট্টা পাওয়ার যোগ্য নন। তখন সেই তালিকা বাতিল করে নতুন করে পাট্টা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। কিন্তু দেড় বছরে ভূমি দফতরের স্থায়ী সমিতির বৈঠক হয়নি ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজত্ব দফতরের গাফিলতিতে। এমনকী যারা পাট্টা পেয়েছেন, রাজনৈতিক ভাবে তাঁদেরও উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা চলছে।

•বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় বাড়ির নোংরা-আবর্জনা ফেলার কোনও স্থায়ী জায়গা নেই। অন্যের জায়গায় নোংরা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে বিবাদ থেকে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত সমিতি কি এলাকায় কোনও আবর্জনা ফলেরা জায়গা করে গিতে পারে না?

আরিফ হোসেন টিঙ্কু, তারাকনগর

এটা অত্যন্ত ভাল প্রস্তাব। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে এ ব্যাপারে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

•এলাকার অনেক মানুষ বার্ধক্য ভাতা ও বিধবা ভাতা পাননি। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতির কোনও ভাবনা-চিন্তা রয়েছে?

সুজিত বিশ্বাস, ভাকুড়ি

পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৬৫৯৬ জন এবং ৬০-৮০ বছরের মধ্যে ২৩৭০ জন বার্ধক্য ভাতা, ৭৭৭১ জন বিধবা ভাতা এবং ৮০২ জন প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে থাকেন। এ ছাড়াও সমাজকল্যাণ, শিল্প দফতর, মৎস্য দফতর থেকেও বেশ কিছু জন ভাতা পেয়ে থাকেন। কিন্তু বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। পঞ্চায়েত পিছু দু’হাজার করে ধরলেও ৩৪ হাজার মানুষের ভাতা পাওয়ার কথা। বোর্ড গঠনের পরে আবেদনপত্র গ্রহণ করে সমস্ত জেলায় পাঠিয়ে দিই। কিন্তু এখন পর্যন্ত নতুন করে কাউকে ভাতা দেওয়া হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement