কমিটি জানাল, র‌্যাগিং হয়েছে

কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের র‌্যাগিং-বিরোধী কমিটি শুক্রবার সম্পূর্ণ অন্য কথা জানিয়েছে নদিয়ার জেলাশাসককে। তারা মেনে নিয়েছে র‌্যাগিংয়ের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:০০
Share:

খোদ কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক নবাগত ছাত্রের কাছ থেকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ পেয়েও নিস্পৃহ ছিলেন। কোনও পদক্ষেপ না-করে এবং তদন্তের তোয়াক্কা না-করেই অভিযুক্ত ছাত্রদের ‘ক্লিনচিট’ দিয়ে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘ওরা তো স্পষ্ট বলে দিয়েছে যে, ওরা এমন কাজ করেনি। তার পরে আর কী থাকতে পারে? বরং সংবাদমাধ্যমের উচিত ওদের কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়া!’’ অথচ সেই কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের র‌্যাগিং-বিরোধী কমিটি শুক্রবার সম্পূর্ণ অন্য কথা জানিয়েছে নদিয়ার জেলাশাসককে। তারা মেনে নিয়েছে র‌্যাগিংয়ের ঘটনা।

Advertisement

ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হলেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। তাঁর কথায়, ‘‘কলেজের র‌্যাগিং বিরোধী কমিটি আমাকে মৌখিক ভাবে দেওয়া রিপোর্টে জানিয়েছে, র‌্যাগিং হয়েছে। দোষীদের কী শাস্তি দেওয়া হবে তা ঠিক করতে ৬ জন শিক্ষককে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।” কমিটি যদি এ হেন কথা বলে থাকে তা হলে কীসের ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শোভন নিয়োগী আগেভাগে অভিযুক্তদের ছাড়পত্র দিয়েছিলেন? তিনি কি তদন্তের রিপোর্ট সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলেন? এই সব প্রশ্ন এখন স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে।

কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রদের একটা বড় অংশ বিষয়টিতে বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ। র‌্যাগিংয়ের মতো এত স্পর্শকাতর এবং গুরুতর বিষয়ে তদন্ত কমিটির সঙ্গে আলোচনা না করে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক কী করে অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন, তা তাঁদের বোধগম্য হচ্ছে না। অভিযুক্তরা দোষ স্বীকার করছেন না মানেই যে তাঁরা সত্যি বলছেন, এমন যুক্তিও বা শোভনবাবু কেন দিলেন, তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

Advertisement

শুধু অভিযুক্তদের পক্ষ টেনে কথা বলাই নয়, শোভনবাবু সংবাদমাধ্যমকে র‌্যাগিংয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদের কাছে ক্ষমা চাইতেও বলেছিলেন। এখন তাঁরই কলেজের র‌্যাগিং-বিরোধী কমিটির এই রিপোর্টের পর তিনি কী বলবেন জানতে চেয়ে ফোন করা হলে বার-বার ফোন কেটে দিয়েছেন তিনি। তারপর ফোন বন্ধ করে দেন।

কলেজের প্রাক্তনীদের সংগঠন প্রকাশ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ তথা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের ভূমিকায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক খগেন দত্ত বলেন, “এমন স্পর্শকাতর বিষয়কে ধামাচাপা দেওয়ার যে চেষ্টা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক করেছেন তাতে প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমাদের মাথা লজ্জায় হেঁট হয়ে গিয়েছে।” কলেজের বেশিরভাগ ছাত্র ও শিক্ষকেরই মত, কলেজের মুখরক্ষায় র‌্যাগিংয়ের কথা অস্বীকার করাটা মারাত্মক ভুল। এই ভাবে মুখ বাঁচানো যায় না, বরং কলেজ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা আরও খারাপ হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন