RBI

ডিজিটাল ব্যাঙ্কিংয়ে রাজ্যে পাইলট নদিয়াই

নদিয়া জেলায় বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ৩৮২টি শাখা আছে। চলতি বছর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জেলার প্রায় ৫৫ শতাংশ গ্রাহক ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থাৎ এটিএম, ফোন ব্যাঙ্কিং, গুগ্‌ল পে, ভিপিএন-এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে শুরু করেছেন। বাকি ৪৫ শতাংশকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সং‌বাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৬:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে নদিয়া জেলাকে ‘ডিজিটাল ডিস্ট্রিক্ট’ হিসাবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। পাইলট প্রোজেক্ট হিসাবে দেশের প্রতিটি রাজ্যে একটি করে জেলা বেছে নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হয়েছে নদিয়াকে। সেই মতো নানান কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। জেলার লিড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানান হয়েছে, আগামী বছর ৩১ মার্চের মধ্যে জেলায় ব্যাঙ্কের একশো শতাংশ গ্রাহককে ‘ডিজিটাল’ মাধ্যমে টাকা লেনদেন করায় অভ্যস্ত করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Advertisement

নদিয়া জেলায় বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ৩৮২টি শাখা আছে। চলতি বছর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জেলার প্রায় ৫৫ শতাংশ গ্রাহক ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থাৎ এটিএম, ফোন ব্যাঙ্কিং, গুগ্‌ল পে, ভিপিএন-এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে শুরু করেছেন। বাকি ৪৫ শতাংশকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। লিড ব্যাঙ্কের কর্তাদের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশ অনুযায়ী, জেলার যত জন গ্রাহক আছেন তাঁদের সবাইকে এটিএম, নেট ব্যাঙ্কিং, ফোন পে, গুগ্‌ল পে বা ভিপিআই-এর মধ্যে যে কোনও একটির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। সেই মতো প্রতিটি ব্যাঙ্কের প্রতিটি শাখায় সমস্ত গ্রাহককে এই কাজে উৎসাহিত করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ব্যাপক প্রচারের জন্য ১৬ ডিসেম্বর কল্যাণীতে একটি সুসজ্জিত মোবাইল ভ্যানের উদ্বোধন করা হচ্ছে।

সেই মোবাইল ভ্যানের উদ্বোধন করবেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার এজিএম সুদীপ ভট্টাচার্য। ওই মোবাইল ভ্যানে ডিসপ্লের মাধ্যমে মানুষকে ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহিত করতে প্রচার করা হবে। পুরো এক মাস ধরে সেই মোবাইল গাড়িটি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার করবে। লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার তপু দত্ত বলছেন, “এটা করতে পারলে ব্যাঙ্কে গুলিতে ভিড় অনেকটাই কমে যাবে। মানুষকে অহেতুক সামান্য সামান্য কাজের জন্য ব্যাঙ্কে এসে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।”

Advertisement

তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাজ্যে পাইলট প্রোজেক্ট হিসাবে নদিয়া জেলাকেই বাছা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে এই প্রোজেক্টকে পুরোপুরি সফল করা যায়।”

কিন্তু কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, এই প্রোজেক্ট কি পুরোপুরি সফল হওয়া সম্ভব? বিশেষ করে, যেখানে এখনও এই রাজ্যের ব্যাঙ্কের বহু গ্রাহক স্কুলেই যাননি, তাঁরা নিজেদের সইটুকুই করতে পারেন না, আঙুলের ছাপ দিয়ে কোনও মতে কাজ চালাতে হয়! প্রশ্ন উঠছে, সেই সব মানুষের পক্ষে কি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করা সম্ভব? তপু বলেন, “তাঁরা হয়তো পারবেন না। কিন্তু তাঁর ছেলে, নাতি, নাতনিদের মাধ্যমে ব্যবহার করবেন। এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা কিন্তু ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে অনেকটাই পটু। ফলে, সমস্যা হবে না।” তবে ব্যাঙ্ক কর্মীদের একটা অংশের দাবি, এই প্রোজেক্ট সফল হলে মানুষ অনেক কম ব্যাঙ্কমুখী হবে। ফলে, তখন ব্যাঙ্কে কর্মীর প্রয়োজনও কম হবে। তাঁদের অভিযোগ, আসলে ব্যাঙ্কগুলিতে কর্মী সঙ্কোচনের উদ্দেশ্যেই এই প্রোজেক্ট নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন