পঞ্চমীতেই ভিড় ভাঙল মণ্ডপে

নদিয়ার দুর্গাপুজো মানেই এ দিকে বাদকুল্লা, ও দিকে কল্যাণী। পনেরো থেকে আঠারো লাখ বাজেটের পুজো। বাদকুল্লার সবচেয়ে বড় পুজো অনামি ক্লাবের কর্তা হিমাদ্রি পাল বলেন, “অন্য বারের তুলনায় পঞ্চমীতে ভিড় এ বার বেশি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৩০
Share:

পঞ্চমীতেই যেন অষ্টমীর ঢল!

Advertisement

হয়তো যখন-তখন বৃষ্টি নামতে পারে বলে, হয়তো বা কলকাতার দেখাদেখি, ছুটি পড়তে না পড়তেই জনতা নেমেছে রাস্তায়।

সন্ধে ঘন হতেই রানাঘাট থেকে বাদকুল্লা হয়ে কৃষ্ণনগরের বাইপাস ভিড়ে হাঁসফাঁস। একই ছবি কল্যাণী, রানাঘাট, এমনকী নবদ্বীপে, বহরমপুর আর ডোমকলেও।

Advertisement

নদিয়ার দুর্গাপুজো মানেই এ দিকে বাদকুল্লা, ও দিকে কল্যাণী। পনেরো থেকে আঠারো লাখ বাজেটের পুজো। বাদকুল্লার সবচেয়ে বড় পুজো অনামি ক্লাবের কর্তা হিমাদ্রি পাল বলেন, “অন্য বারের তুলনায় পঞ্চমীতে ভিড় এ বার বেশি। মনে হয়, বৃষ্টির ভয়ে আগেভাগে ঠাকুর দেখে নিতে চাইছেন অনেকে।” ভিড় উপচেছে বাদকুল্লা ইউনাইটেড, ন্যাশনাল বয়েজ ক্লাব, গাঙিনী উদয়ন সংঘ বা ফ্রেন্ডস ক্লাবের মণ্ডপেও। রাতে জমজমাট রানাঘাটের পাইকপাড়া ব্রতী সংঘ, পান্থপাড়া অধিবাসীবৃন্দ, বয়েজ ক্লাব ও ভাংরাপাড়া-সিদ্ধান্ত পাড়ার পুজো মণ্ডপ। চাকদহের কেভিএম তিন নম্বর, পাজির মোড় তরুণ সঙ্ঘ বা গোরাপাড়া নেতাজী স্পোর্টিং মণ্ডপের সামনে লম্বা লাইন।

বহরমপুর পুরসভার অনুমোদন পাওয়া ১৮০টি পুজোর কয়েকটির উদ্বোধন হয়েছে রবিবার, চতুর্থীতেই। সোমবার উদ্বোধন হয় আরও বেশ কয়েকটির। বাকিগুলি আজ, ষষ্ঠীর বিকেল বা সন্ধেয় দরজা খুলবে। কিন্তু দর্শনার্থীদের তর সইছেন না। বাবুলবোনা, বিষ্ণুপুর, কাশিমবাজার, সৈয়দাবাদ, খাগড়া, বহরমপুর, গোরাবাজারের পুজো মণ্ডপগুলোতে রবিবার থেকেই মানুষের ঢল। বহরমপুর শহর থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে আয়েসবাগেও পুজোর দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন পড়েছে পঞ্চমীতে।

সেই তুলনায় কৃষ্ণনগরে দুর্গাপুজো ঘিরে তেমন তোড়জোড় নেই। নদিয়ার সদর শহর জগদ্ধাত্রীর দখলে। কয়েক সপ্তাহ পরেই জগদ্ধাত্রী পুজো। বস্তুত তারই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই দুর্গাপুজো নিয়ে বেশি মাতামাতি নেই। একই ভাবে নবদ্বীপ আর শান্তিপুর রাসের শহর। যদিও বছর কয়েক হল, নবদ্বীপে দুর্গাপুজো নিয়েও হইচই শুরু হয়েছে। তিন থেকে তেরো লাখ বাজেটের পুজো হচ্ছে। সাবেক প্রথার ডাকের সাজ থেকে থিম পুজো, সবই আছে তালিকায়। বারোয়ারি আজাদ হিন্দ ক্লাব, মণিপুর বারোয়ারি, বড়ালঘাট স্পোর্টিং, তরুণ সঙ্ঘ, গৌরগঙ্গা বারোয়ারি, পোড়াঘাটের পুজো চোখ টানছে জনতার। পঞ্চমীর নবদ্বীপে জনজোয়ার না হলেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

যে সব জায়গায় বড় পুজো হচ্ছে, প্রায় সর্বত্রই বিকেল থেকেই রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণে নেমে পড়েছে পুলিশ। বহরমপুরে ভিড় সামলাতে শহরের আটটি প্রধান রাস্তাকে একমুখি করে দেওয়া হয়েছে। তাতে অনেকের একটু অসুবিধা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ব্যাপক যানজট ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে এ ছাড়া আর কোনও উপায়ও নেই।

সবচেয়ে বড় কথা, পঞ্চমীতেই দর্শনার্থীদের যে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে, অষ্টমী-নবমীতে কী হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। জনজোয়ার পথে নামুক, কিন্তু সকলে আনন্দ করে ঠাকুর দেখে নিরাপদে ঘরে ফিরুক, সেইটকুই তো চাওয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন