দেড় মাসেই উধাও ৫২ লাখের রিফ্লেক্টর

যার ঝিকমিকে আলোয় পথ চিনে লেন সমঝে গাড়ি চালাবেন রাতের চালকেরা। পুলিশের এ হেন পরামর্শ শুনেই হরিণঘাটা পুরসভা রাস্তায় লাগিয়েছিল রিফ্লেক্টর। কিন্তু দেড় মাস পার হতেই রাতের ‘তারা’রা বিলকুল হাওয়া হয়ে গিয়েছে। কী করে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ০১:৫৩
Share:

আঠা দিয়ে লাগানো রিফ্লেক্টর। —নিজস্ব চিত্র

আঁধার রাতে তারা ঘেরা পথ যেন!

Advertisement

যার ঝিকমিকে আলোয় পথ চিনে লেন সমঝে গাড়ি চালাবেন রাতের চালকেরা। পুলিশের এ হেন পরামর্শ শুনেই হরিণঘাটা পুরসভা রাস্তায় লাগিয়েছিল রিফ্লেক্টর। কিন্তু দেড় মাস পার হতেই রাতের ‘তারা’রা বিলকুল হাওয়া হয়ে গিয়েছে। কী করে?

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রিফ্লেক্টরগুলি নাট-বল্টু নয়, লাগানো হয়েছিল আঠা দিয়ে। গরমে তা বেমালুম উঠে গিয়েছে। বিরোধীরা যা শুনে বলছেন, ‘এরেই কয় দুর্নীতি!’ যার নিট ফল, ৫২ লক্ষ টাকা জলে।

Advertisement

মাস দশেক আগে পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা হয়েছে হরিণঘাটা। বড় জাগুলিকে কেন্দ্র করে দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই পুরসভা। যথার্থ পুর এলাকা হয়ে উঠতে গেলে বিস্তর উন্নয়নের কাজ দরকার। অধিকাংশ রাস্তাঘাট কাঁচা, পানীয় জলের পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যায়নি বাড়িতে। এলাকায় এখনও সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।

এই অবস্থায় রাস্তায় ‘রিফ্লেটিং ডিভাইডার’ বসানো বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করছেন হরিনঘাটার অনেকেই। তার উপরে আবার সেগুলি উধাও হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ আরও বেড়েছে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিন আগে পুরসভা মূল রাস্তাগুলিতে রিফ্লেক্টর বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তার জন্য ৫২ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়। পাঁচ লক্ষের বেশি টাকার কাজ হলে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে তার দরপত্র নেওয়া নিয়ম। কিন্তু সেই পরিকাঠামো হরিণঘাটা পুরসভায় এখনও তৈরি হয়নি। ফলে বিশেষ অধিবেশনে তা পাস করিয়ে নেওয়া হয়।

এক দিকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক, অন্য দিকে কাঁচরাপাড়া-জাগুলি রাজ্য সড়ক। সেই জন্য এই এলাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। রাতে প্রচুর লরি দু’টি রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করে। মাঝে-মধ্যেই লেন ভেঙে অন্য লেনে লরি ঢুকে পড়ায় দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে অনেক আগেই পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, ব্যস্ত রাস্তাগুলিতে রিফ্লেক্টর লাগানো হোক। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের কিছুটা অংশে, সেই সঙ্গে কাঁচরাপাড়া-জাগুলি রোড এবং জাগুলি-হরিণঘাটা রোড মিলিয়ে ২৫ কিলোমিটার রাস্তায় রিফ্লেক্টর বসানো হয়। কাজ শেষ হয় দু’মাস আগে।

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পিচ রাস্তার উপরে পুরু আঠা দিয়ে রিফ্লেক্টরগুলি বসানো হয়েছিল।

পুরপ্রধান রাজীব দালাল বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা ছিল না। এখন দেখছি সব টাকা
জলেই গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন