এখন বালিরঘাট সেতু। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
দুর্ঘটনা রুখতে কংক্রিটের ‘ক্র্যাস বেরিয়ার’ করা হয়েছে। রেলিংয়ে পড়েছে নীল-সাদা রঙের পোঁচ। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে সেতুর দু’দিকে দু’টি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। ছবিটা দৌলতাবাদের বালিরঘাট সেতুর।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আগে কিছু না হলে তো প্রশাসনের টনক নড়ে না। এ সবই হল। তবে ৪৪ জন মারা যাওয়ার পরে।
গত জানুয়ারি মাসে বাস দুর্ঘটনার আগে সেতুর এই চেহারা ছিল না। এলাকার লোকজন জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন ধরে সেতু বেহাল হয়ে পড়েছিল। সেতুর রেলিং ভেঙে বিলের জলে বাস পড়ে ৪৪ জন যাত্রীর মৃত্যুর পরে টনক নড়ে সরকারের। আর তার পরেই বালিরঘাট-সহ রাজ্যের সমস্ত সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি ‘ক্র্যাস বেরিয়ার’ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ বার কলকাতায় মাঝেরহাটে সেতু দুর্ঘটনা বালিরঘাটের স্মৃতি উসকে দিয়েছে।
দৌলতাবাদের বাসিন্দা সাজ্জাদ শেখ বৃহস্পতিবার বালিরঘাট সেতু পেরিয়ে মোটরবাইকে করে বহরমপুর যাচ্ছিলেন। সাজ্জাদ বলছেন, “বালিরঘাটের সেই দুর্ঘটনার পরে সেতু দিয়ে যাতায়াত করতেই ভয় করত। এখনও সে ভয় কমেনি।’’
বালিরঘাটের সুমিত হালদার বলছেন, “এখনও দ্রুত গতিতে বাস ও অন্য যানবাহন চলাচল করে। সেতুর ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্টে’ গর্ত রয়েছে। ফলে একেবারে নিশ্চিন্ত হতে পারছি কই!”
বালিরঘাটের সুবোধ প্রামাণিকের কথায়, ‘‘দিন দশেক আগে বালিরঘাট সেতুর অ্যাপ্রোচের সামনে একটি বাস দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায়। সে দিন ওই সেতুর মুর্শিদাবাদ থানার দিকের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গর্তে পড়ার উপক্রম হয়েছিল।” তবে বালিরঘাট সেতুর স্বাস্থ্য ভাল বলে দাবি পুর্ত দফতরের কর্তাদের। পুর্ত দফতরের বহরমপুর ২ ডিভিশনের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অদ্রীশ চৌধুরী বলেন, “বিশেষজ্ঞ দল বালিরঘাটের সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে গত মাসেই আমাদের রিপোর্ট দিয়েছেন। তাঁদের রিপোর্ট অনুযায়ী এই সেতুর স্বাস্থ্য ভাল। তবে অ্যাপ্রোচ স্ল্যাব কিছুটা উঁচু করতে হবে। তা শীঘ্রই করা হবে।’’
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, “জেলার বিভিন্ন সেতু সংস্কার করা হয়েছে। সেতুতে ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করে পুলিশ নজরদারি করছে। এ ছাড়া পুর্ত দফতরকে জেলার সমস্ত সেতু পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।”