প্রজাতন্ত্র গেঁথে রয়েছে হালের মোটরবাইকে

সময়ের সঙ্গে পতাকায় খাদির কাপড়ের জায়গায় এসেছে টেরিকট, সিল্ক। আরও পরে কাগজের পতাকা। স্বাধীনতা বা প্রজাতন্ত্র দিবসের সাজসজ্জার অঙ্গ হিসাবে জনপ্রিয় প্লাস্টিকের তৈরি পতাকার চেন।

Advertisement

গৌতম প্রামাণিক এবং দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:১১
Share:

প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন বিক্রি হচ্ছে নানা মাপের তেরঙ্গা। বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

দিনকয়েক থেকে নাওয়াখাওয়ার সময় পাচ্ছেন না মনিহারি দোকানের ব্যবসায়ীরা। প্রথমে সরস্বতী পুজো, নেতাজির জন্মদিন। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই প্রজাতন্ত্র দিবস। ২৩ জানুয়ারি, ২৬ জানুয়ারি, ১৫ অগস্টের মতো দিনে স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় পতাকার চাহিদা বেড়ে যায়। একটা সময়ে ওই সব দিনে কেবলমাত্র খাদি কাপড়ের পতাকা তোলাই নিয়ম ছিল। প্রমাণ মাপের খাদি পতাকার দাম ছিল এক থেকে দেড় টাকা। সময়ের সঙ্গে পতাকায় খাদির কাপড়ের জায়গায় এসেছে টেরিকট, সিল্ক। আরও পরে কাগজের পতাকা। স্বাধীনতা বা প্রজাতন্ত্র দিবসের সাজসজ্জার অঙ্গ হিসাবে জনপ্রিয় প্লাস্টিকের তৈরি পতাকার চেন।

Advertisement

ইদানীং এই সব দিনের কথা মাথায় রেখে হাজারও উপকরণে ছয়লাপ দোকান। ছোট-বড় নানা মাপের পতাকা ছাড়াও টুপি, ব্যাজ, সানগার্ড, রিস্ট ব্যান্ড, উত্তরীয়, থ্রিডি স্টিকারে ঢেকে গিয়েছে দোকান। কৃষ্ণনগর, নবদ্বীপের বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এ বারের প্রজাতন্ত্র দিবসে পতাকার ট্যাটু হিট। ব্যবসায়ী অশোক চক্রবর্তী জানান, দু’টাকা দামের এই ট্যাটু ক্রেতাদের পছন্দ হয়েছে। সহজেই গায়ে লাগিয়ে নেওয়া যায়। ক্লাব বা নাচের স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছেও এর বেশ চাহিদা রয়েছে।

নদিয়ার বাজারে যদি ট্যাটু হিট হয়, তা হলে বহরমপুরের বাজারে নতুন আমদানি মোটরবাইকের জন্য স্ট্যান্ড পতাকা। ফুটখানেক লম্বা প্লাস্টিকের লাঠির নিচে আঁটা ক্লিপের স্ক্রু ঘুরিয়ে বাইকের হ্যান্ডেলে লাগিয়ে নেওয়া যাচ্ছে এই পতাকা। দাম ১০-২০ টাকা। হু হু করে বিকোচ্ছে। বহরমপুর সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী জগন্নাথ কুণ্ডুর দোকানে পতাকার প্লাস্টিক চেনের দাম চল্লিশ টাকা। উত্তরীয় ২০ টাকা, ব্যাজ ৫-৮ টাকা, নানা সাইজের কাঠি পতাকা ১, ৩ এবং ৫ টাকা। বিক্রিও হচ্ছে দেদার। বহরমপুরের এক ব্যবসায়ী জয়ন্ত বড়াল বলছেন, ‘‘এ বছর পর পর উৎসবগুলো হওয়াতে বেচাকেনা অন্য বছরের থেকে বেশ ভাল হয়েছে।”

Advertisement

নবদ্বীপ বাজারে পতাকার মাপ অনুসারে পাঁচ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতা অশোক চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ৫০ থেকে ৭০ টাকা দামের পতাকার চাহিদাই বেশি। তবে নানা মাপের টেবিল পতাকা স্ট্যান্ডের বিক্রিও ভাল। সব দেখে নবদ্বীপের এক প্রবীণ দর্জি নিত্যানন্দ আচার্য বলছেন, ‘‘আগে এমন পতাকা নিয়ে বিক্রিবাটা ভাবাই যেত না। বিভিন্ন ক্লাব, লাইব্রেরি বা স্কুল আগে থেকে অর্ডার দিয়ে যেত। খাদির কাপড় দিয়ে নির্দিষ্ট মাপে পতাকা তৈরি করে দিতাম। চার-পাঁচ টাকার মধ্যেই হয়ে যেত। ব্যাপারটা অন্যরকম ছিল। এখন দিনকাল পাল্টেছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলেই তো পিছিয়ে পড়তে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন