ঝিকঝিক যাওয়া আছে, কু ডাকে ফেরায়

ঝক্কি বলে ঝক্কি! ট্রেনে ওঠার জন্য টিকিটের লাইনটাও যেন আস্ত একটা ট্রেন। সে লাইনের লেজ এঁকেবেঁকে চলে গিয়েছে সেই রাস্তা পর্যন্ত।

Advertisement

ইন্দ্রাশিস বাগচী

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৯
Share:

টিকিটের লাইনে: বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র

‘যেতে পারি, কিন্তু কেন যাবো’ নয়, যাওয়ার আগেই লোকজনের মনে কু ডাকে, ‘চলে না হয় গেলাম! কিন্তু ফেরার পথে সেই ঝক্কিই তো পোহাতে হবে!’

Advertisement

ঝক্কি বলে ঝক্কি! ট্রেনে ওঠার জন্য টিকিটের লাইনটাও যেন আস্ত একটা ট্রেন। সে লাইনের লেজ এঁকেবেঁকে চলে গিয়েছে সেই রাস্তা পর্যন্ত। লাইনের শেষের লোকজন কেবলই উসখুস করেন, ‘‘এই বুঝি ট্রেন চলে এল!’’

তার পরেই টিকিট কাউন্টারের উদ্দেশে একের পর এক উড়ে যায়,

Advertisement

—‘ও দাদা, জোরে হাত চালান।’

—‘লাইন যে এগোচ্ছেই না।’

—‘ট্রেনটা মিস হলে সব যাবে!’

—‘কেন যে রিটার্ন টিকিটটা দেয় না, কে জানে! রিটার্ন টিকিট থাকলে এই ঝামেলায় পড়তে হত না!’

কিন্তু কে শোনে কার কথা! এই ঝামেলাই এখন রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষ্ণনগর থেকে লালগোলা এলাকার বহু রেলযাত্রীর। বছর তিনেক ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে রিটার্ন টিকিট।

বেলডাঙার মৌসুমী সমাদ্দার, ভগবানগোলার পিন্টু শেখ, পলাশির আফাজুল শেখেরা বলছেন, ‘‘রিটার্ন টিকিটটা দিলে এক বার কষ্ট করতে হয়। কিন্তু এখন এক বার যাওয়ার জন্য ভিড় লাইনে দাঁড়াতে হয়। তার পরে ফেরার পথে আবার। মাঝেমধ্যে লাইনেই দাঁড়িয়ে থাকি। পাশ দিয়ে চলে যায় ট্রেন। রেল দফতরের অবিলম্বে এ ব্যাপারে নজর দেওয়া উচিত।

কৃষ্ণনগর লালগোলা রুটের এক স্টেশন মাস্টার বলছেন, ‘‘আগের তুলনায় এখন ট্রেনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তা ছাড়া বহু লোকজন রিটার্ন টিকিটের অপব্যবহার করছিলেন। সেই কারণেই ২০১৬ সাল থেকে এটা বন্ধ রয়েছে।’’

বহরমপুর-লালগোলা নিত্যযাত্রীর সমিতির সম্পাদক মলয় বণিক বলছেন, ‘‘রিটার্ন টিকিট বন্ধ করে দেওয়ায় বহু যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। আমরা সমস্যার কথা বহরমপুর স্টেশন ম্যানেজারকে জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের বলা হয়েছে, ‘রিটার্ন টিকিট দেওয়া হয় লোকালে, প্যাসেঞ্জার ট্রেনে নয়।’ কী অদ্ভুত যুক্তি, বলুন তো!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন