পুজো-পরবের পরে পথে প্রাপ্তি পাংচার

পথে হল দেরি! কিন্তু দেরির মাসুল গুনতে হবে কাকে? সহজ উত্তর, যিনি মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন, তাঁকেই! অতএব, দীর্ঘ অপেক্ষার পরে ক্লান্ত তরুণী বেজায় বিরক্ত, ‘‘একটা দিনও ঠিক সময়ে পৌঁছতে পার না কেন?

Advertisement

আব্দুল হাসিম

রানিনগর শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:৫০
Share:

গতি-ফেরাতে: গ্যারাজে ব্যস্ত কর্মী। ডান দিকে, বিপাকে বাইক চালক। রানিনগর ও বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

পথে হল দেরি!

Advertisement

কিন্তু দেরির মাসুল গুনতে হবে কাকে? সহজ উত্তর, যিনি মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন, তাঁকেই!

অতএব, দীর্ঘ অপেক্ষার পরে ক্লান্ত তরুণী বেজায় বিরক্ত, ‘‘একটা দিনও ঠিক সময়ে পৌঁছতে পার না কেন?’’

Advertisement

ঝাঁঝিয়ে ওঠেন গিন্নিও, ‘‘চাট্টি আনাজ আনতে এত সময় লেগে গেল? বাজারের চা পেটে না পড়লে ভাল লাগে না বুঝি?’’

দেরি মানে দেরিই। সেখানে শুকনো ‘সরি’তে চিঁড়ে ভেজে না! আর এই এত তাপ-উত্তাপ-রাগ-অভিমানের পিছনে রয়েছে একটি ছোট্ট শব্দ— পাংচার! নিঃশব্দ ঘাতক বললেও কিছু কম বলা হয় না।

কথাটা যে কথার কথা নয় তা চাকায় চাকায় টের পাচ্ছেন বাইক চালকেরা। এই একটু আগেই দিব্যি ছুটছিল বাইক। চালক নিজেকে ‘সপ্তপদী’র কৃষ্ণেন্দু ভাবছিলেন। পিছনের আসনে শুধু রিনা ব্রাউনই যা ছিলেন না। আচমকা টলোমলো পিছনের চাকা। সপ্তপদী থেকে সটান রুখু বাস্তবে। চাকা পাংচার। সঙ্গে প্রেস্টিজও।

বাইক তখন অবাধ্য দামাল। চালক তাকে আপ্রাণ ঠেলে চলেছেন। পাশ থেকে উড়ে আসছে টীপ্পনি, ‘‘কী দাদা, কোন চাকা? আর একটু এগিয়ে, মোড়টা ঘুরেই গ্যারাজ!’’

গ্যারাজের সঙ্গে বাইকের যেন নাড়ির টান। সে টান উপেক্ষা করে সাধ্যি কার! কিন্তু গোল বাধে এই শীতের আগে। শুরুটা হয় বিশ্বকর্মা পুজো দিয়ে। এই এ বার যেমন। ইদুজ্জোহা, বিশ্বকর্মা, মহরম, দুর্গা, লক্ষ্মী, কালী, জগদ্ধাত্রীপুজো সঙ্গে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান। কোথাও উৎসবে উপলক্ষে তৈরি হয়েছিল তোরণ, প্যান্ডেল। কোথাও টাঙানো হয়েছিল ফ্লেক্স, ফেস্টুন। তার পরে পুজো-পরব শেষ। তাড়াহুড়ো করে খুলেও ফেলা হয়েছে সে সব। পায়ে পায়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য পেরেক। পাংচারের কারণ সেটাই!

জলঙ্গি থেকে জঙ্গিপুর, রানিনগর থেকে রামনগর, বলরামপুর থেকে বহরমপুর পাংচার-চিত্রটা কমবেশি সবত্রই এক। রানিনগরের গ্যারাজ মালিক নিমাই চৌধুরী, বহরমপুরের গ্যারাজ মালিক সেন্টু শেখেরা বলছেন, ‘‘পুজো-পরবের পরে এই সময়ে প্রতি বছরেই পাংচারের পরিমাণ বাড়ে। পথে-ঘাটে তোরণ, প্যান্ডেলের পেরেক পড়ে থাকে কি না!’’

রানিনগরের এক পুজো উদ্যোক্তা পীযূষ মণ্ডল বলছেন, ‘‘প্যান্ডেল যত যত্ন করে তৈরি হয়, খোলার সময় তার অভাব থাকে। ফলে, রাস্তাঘাটে পিন, তার, পেরেক পড়ে থাকে। আমরা ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন