মাঝরাতে গিয়ে কর্তা দেখলেন অবাধে বালি লুঠ

যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন এক সরকারি অফিসার। তার পরেও কেন বাকি সাত জনকে ছেড়ে দেওয়া হল তার ব্যাখ্যা মেলেনি। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, মূলত শাসক দলের চাপেই ধৃতদের ছেড়ে দিতে হয়েছে। নতুন করে যে বালি পাচার শুরু হয়েছে, তার পিছনেও কিছু তৃণমূল নেতার মদত রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০১:০৬
Share:

ফাইল চিত্র।

পুলিশ বারবার হানা দেওয়ায় গত কয়েক মাস বালি পাচার অনেকটাই বন্ধ ছিল কল্যাণীর মাঝের চর এলাকায়। কিন্তু গত এক মাস ধরে গভীর রাতে ফের তা চালু হয়েছে। রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টের মধ্যে গঙ্গা থেকে বালি তুলে পাচার হচ্ছে খবর পেয়ে হানা দিয়ে আট জনকে পাকড়াও করল পুলিশ।

Advertisement

বুধবার রাত আড়াইটে নাগাদ মাঝেরচর ঘাটে হানা দেন কল্যাণীর মহকুমাশাসক স্বপন কুণ্ডু। কল্যাণী থানাকে আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি। হাতেনাতে ধরা পড়ে কয়েক জন। বাজেয়াপ্ত করা হয় বালি ভর্তি ডাম্পার। পুলিশ প্রথমে আট জনকে গ্রেফতার করলেও পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে থানা থেকে সাত জনকে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়।

কেন ছেড়ে দেওয়া হল?

Advertisement

যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন এক সরকারি অফিসার। তার পরেও কেন বাকি সাত জনকে ছেড়ে দেওয়া হল তার ব্যাখ্যা মেলেনি। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, মূলত শাসক দলের চাপেই ধৃতদের ছেড়ে দিতে হয়েছে। নতুন করে যে বালি পাচার শুরু হয়েছে, তার পিছনেও কিছু তৃণমূল নেতার মদত রয়েছে। কল্যাণী শহর তৃণমূল সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘বালি পাচারে আমাদের কেউ
জড়িত নয়।’’

এর আগে মাঝের চরে সরকারি জমি থেকে মাটি এবং গঙ্গা থেকে বালি তুলে পাচারে নাম জড়িয়েছিল তৃণমূল কাউন্সিলর ভক্তিভূষণ রায়ের। পরে বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়ে দলে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। ফলে এখনই তিনি আর ঘাটের দিকে ঘেঁষতে পারছেন না। এই অবসরে অন্য এক দল লোক রাতের অন্ধকারে বালি পাচার শুরু করেছে। তাতে বড় নেতাদের মদত রয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রেরই একাংশের অভিযোগ।

বুধবার রাত আড়াইটা নাগাদ মহকুমাশাসক, এসডিপিও (কল্যাণী) উত্তম ঘোষ ও ভূমি সংস্কার দফতরের অফিসারেরা মাঝের চরে যান। মাঝ রাস্তা থেকে তাঁরা ডেকে নেন কল্যাণী থানার পুলিশকে। একটি ডাম্পারে তখন বালি ভরা হচ্ছিল। তাঁরা যাওয়া মাত্রই কয়েক জন ছুটে পালিয়ে যায়। পুলিশ আট জনকে ধরে ফেলে।

মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ পরে কল্যাণী থানা জানায়, ডাম্পারের চালক বিশু বাগকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বালি পাচারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া যায়নি বাকিদের। তাই ব্যক্তিগত জামিনে তাদের ছেড়ে
দেওয়া হয়েছে।

কল্যাণীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়াও বলেন, ‘‘বাকি সাত জনের বিরুদ্ধে সরাসরি বালি পাচারের কোনও অভিযোগ ছিল না। সেই জন্যই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে যদি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলে, তবে তাদের আবার ধরে আনা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন