তেষ্টায় ছাতি ফাটে, জলের দেখা নেই বড়ঞা-মসড্ডায়

বড়ঞা ১ পঞ্চায়েতে বেশিরভাগ এলাকায় ছবিটা এমনই। ফলে তেষ্টার জল আনতে কলসি নিয়ে ছুটতে হয় দূরের কোনও গ্রামে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সব জেনেও চুপ স্থানীয় পঞ্চায়েত ও জনপ্রতিনিধিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০২:২২
Share:

নলকূপ আছে। কিন্তু জল নেই। তেষ্টায় ছাতি ফেটে গেলেও এক ফোঁটা জল মিলবে না।

Advertisement

বড়ঞা ১ পঞ্চায়েতে বেশিরভাগ এলাকায় ছবিটা এমনই। ফলে তেষ্টার জল আনতে কলসি নিয়ে ছুটতে হয় দূরের কোনও গ্রামে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সব জেনেও চুপ স্থানীয় পঞ্চায়েত ও জনপ্রতিনিধিরা।

বছর কয়েক আগে সজলধারা প্রকল্পের আওতায় পাড়ায় পাড়ায় নলকূপ বসানো হয়েছিল। বছর খানেক ধরে এলাকার অধিকাংশ নলকূপ বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। কোনও কোনও নলকূপের একাংশ ভেঙে গিয়েছে। কিন্তু তা সারানোর আর সময় পাননি কেউই।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা মিলন দাসের ক্ষোভ, ‘‘স্বাধীনতার এত বছর পরেও তেষ্টার জলটুকুও পাচ্ছি না। এটা লজ্জার বিষয় নয়, বলুন?’’

বৃদ্ধা জানকি মণ্ডল বলছেন, ‘‘ ‘‘বয়স হয়ে গিয়েছে। নানা রোগে ভুগছি। পুকুরে স্নান করতে যেতে সমস্যা হয়। অথচ পাড়ার সব নলকূপই খারাপ। জল আনতে বোতল হাতে ছুটতে হচ্ছে অন্য গাঁয়ে। সেখানেও লম্বা লাইন। এই বয়সে কি আর এত ধকল সহ্য হয়!’’

ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩টি সংসদে ৩৭২টি নলকূপ রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে ১৭৫টি। একসময় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বসানো পাইপ লাইনের মাধ্যমে সকাল, দুপুর ও বিকেল— তিন বেলা দু’ঘন্টা করে জল আসত। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে সেই পাইপও ফেটে গিয়েছে। তারপর থেকেই তা সারানো হয়নি। নতুন পাইপও বসানো হয়নি। ফলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পরিস্রুত জল থেকেও লোকজন বঞ্চিত হচ্ছেন।

বড়ঞার বিধায়ক কংগ্রেসের প্রতিমা রজক বলেন, “পাইপ লাইনের কাজের জন্য বছর খানেক আগে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে দরবার করে প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করিয়েছি। কিন্তু সে কাজ এখনও শুরু হয়নি।’’

কিন্তু পঞ্চায়েতের দেখভালের দায়িত্বে থাকা নলকূপগুলি কেন সারানো হচ্ছে না?

ওই পঞ্চায়েতের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বছর খানেক ধরে নলকূপ মেরামতি খাতে কোনও অর্থ জেলা পরিষদের মাধ্যমে পঞ্চায়েতের হাতে আসেনি। ফলে ইচ্ছে থাকলেও উপায় হচ্ছে না।আর তারই ফল ভুগছেন বড়ঞা, হরিধ্বনি, মসড্ডা, গোপীপুর, হাপিনা, যুগশ্বরার মতো প্রায় দশটি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার বাসিন্দা। হরিধ্বনি গ্রামের চার মোড়ে চারটি নলকূপ রয়েছে। কিন্তু একটি থেকেও জল পড়ে না। গ্রামের সম্পন্ন কয়েকটি পরিবার পাম্পের ব্যবস্থা করেছে।

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, ওই পড়শির বাড়িতে লোকজন জল নিতে সকাল-সন্ধ্যায় ভি়ড় করেন। গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান কংগ্রেসের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “কিছুদিন আগে পঞ্চায়েতে টাকা এসেছে। নলকূপ মেরামতিও শুরু হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement