প্রধানশিক্ষক নিজে গ্রামবাসীদের নিয়ে এসে ওই স্কুলে তালা দিয়ে যান। চাবি রাখেন নিজের কাছে। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের নির্দেশে গরমের জন্য রাজ্যের স্কুল-কলেজে ছুটি পড়েছে। অন্য দিকে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা গ্রেফতার হতেই সোমবার পিয়ারাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে বাড়তি একটি তালা ঝুলিয়ে দিয়ে গেলেন প্রধানশিক্ষক। সাক্ষী হিসেবে তিনি উপস্থিত রাখলেন গ্রামবাসীদের।
ব্যাপারটা কী? জানা গিয়েছে এই স্কুলেই শিক্ষকতা করেন জীবনকৃষ্ণের শ্যালক নিতাই সাহা। তাই ওই স্কুলে শিক্ষকের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি লোপাটের ভয়ে বাড়তি তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন প্রধানশিক্ষক আসিকুল ইসলাম।
মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের সমষ্টিনগরে ৭৪ নম্বর নতুন পিয়ারাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক আসিকুলের ‘ভয়’ সিবিআই তাঁকেও হয়তো ডাক পাঠাবে। কারণ বিধায়কের শ্যালক নিতাই যে ওই স্কুলেরই শিক্ষক। বিধায়কের শ্যালকের নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারেও প্রশ্ন উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আশিকুল।
ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, সোমবার পিয়ারাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল দরজার তালা লাগানোর পর চাবিগোছা এত দিন থাকত বড়ঞার বিধায়কের শ্যালকের বাড়িতেই। সোমবার সকালে জীবনকৃষ্ণের গ্রেফতারের খবর পেয়েই গ্রামের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে পৌঁছে যান ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক আসিকুল। তালা লাগিয়ে চাবি তিনি রাখেন নিজের কাছে।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতিতে মুর্শিদাবাদ জেলার নাম এসেছে আগেই। সুতির গোথা এআর হাই স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নথি লোপাট হওয়ার বিতর্কে সিআইডি হেফাজতে রয়েছেন দুই নিয়োগকর্তা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই তালা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন প্রধানশিক্ষক। তিনি বলেন, ‘‘নিতাই সাহার নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি রয়েছে স্কুলের মধ্যে। আর স্কুলের চাবিও নিতাইয়ের কাছে। তাই আর ঝুঁকি নিই কী করে? গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে তাই তালা দিলাম।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ পান বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের শ্যালক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন বিধায়কের স্ত্রী টগরি সাহাও।