প্রশিক্ষণ নেই, স্মার্টক্লাস হচ্ছে না প্রাথমিকে

হাতেগোনা দু’একটি স্কুলে, কম্পিউটার সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যে সাধারণ জ্ঞান আছে তাই কাজে লাগিয়ে কোনও মতে ক্লাস চলছে। কোনও স্কুলেই তা একেবারেই ব্যবহার করা হয়নি। আলমারিবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে প্রজেক্টর। ধুলো জমছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৩
Share:

স্মার্ট ক্লাসের জন্য নদিয়া-মুর্শিদাবাদে একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিলি করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রজেক্টর। কিন্তু সেই অর্থে কোনও প্রশিক্ষণ পাননি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ফলে বেশ কিছু স্কুল প্রজেক্টর পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারছে না। হাতেগোনা দু’একটি স্কুলে, কম্পিউটার সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যে সাধারণ জ্ঞান আছে তাই কাজে লাগিয়ে কোনও মতে ক্লাস চলছে। কোনও স্কুলেই তা একেবারেই ব্যবহার করা হয়নি। আলমারিবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে প্রজেক্টর। ধুলো জমছে।

Advertisement

তবে প্রতিটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, স্মার্ট ক্লাস নিতে গেলে প্রশিক্ষণের দরকার। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে ক্লাস নিতে তাঁদের আর কোনও অসুবিধা হবে না। নদিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায়ের দাবি, “প্রজেক্টর দেওয়ার সময় একবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তবে এবারে নতুন বছরের শুরুতেই প্রশিক্ষণ দিয়ে পুরোপুরিভাবে প্রজেক্টরের মাধ্যনে স্মার্ট ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।” তাঁর দাবি, প্রজেক্টরগুলি একেবারে পড়ে রয়েছে এমন নয়।

মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান তথা জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) নিহারকান্তি ভট্টাচার্য বলছেন, “যদি প্রশিক্ষণ না দেওয়া হয়, আমাদের জেলাতেও বছরের শুরুতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব।’’

Advertisement

মাস ছয়েক আগে নদিয়া-মুর্শিদাবাদে স্মার্ট ক্লাসের জন্য বাছাই করা কিছু স্কুলকে অত্যাধুনিক প্রজেক্টর দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের ৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নদিয়ার ৩৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ধরনের প্রজেক্টর দেওয়া হয়।

বেলডাঙার সুরুলিয়া কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি প্রজেক্টর পেয়েছে। কালেভদ্রে তা চালিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়। ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অঞ্জুশ্রী ঘোষ বলছেন, “প্রজেক্টর দেওয়া হলেও সে ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও একজন শিক্ষক মাঝে মধ্যে প্রজেক্টর চালু করে ক্লাস নেন।” তাঁর দাবি, মাসে অন্তত একদিন ক্লাস নেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ পেলে বাকি শিক্ষকরাও নিয়মিত ক্লাস নিতে পারবেন।

একই কথা জানান, হরিহরপাড়ার ট্যাংরামারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীমকুমার অধিকারী।

নদিয়ার কৃষ্ণনগরের মৃণালিনী গার্লস প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রজেক্টর পেলেও ক্লাস শুরু হয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পূর্ণিমা ঘোষ বলছেন, “কম্পিউটার সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কোনও ধারণা নেই বললেই চলে। তাই প্রজেক্টর পেলেও স্মার্ট ক্লাস শুরু করা যায়নি।”

তবে অনেক স্কুল রয়েছে সরকারি ভাবে প্রজেক্টর না পেলেও নিজেরাই তা কিনে ক্লাস নিচ্ছে। যেমন নদিয়ার তেহট্টের অভয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চাকদহের চালিতাতলি প্রাথমিক বিদ্যালয়। অভয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সফিকুল ইসলাম, “পড়ানোর সময় প্রজেক্টের মাধ্যমে ছবি দেখালে খুব ভাল হয়। তাতে পড়ুয়ারা পড়া দ্রুত বুঝতে পারে।” চালিতাতলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমন দাস বলছেন, ‘‘পাহাড় নিয়ে পড়ানো সময় পাহাড়ের ছবি দেখালে ওদের বুঝতে সুবিধা হয়, তেমনি নদী নিয়ে পড়াতে গেলে নদীর ছবি দেখালে পড়ুয়াদের বুঝতে সুবিধা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন