ছেলেবেলায় টিভিতে প্রায়ই একটা বিজ্ঞাপন দেখতাম। এক জন লোক জনপরিসরে সিগারেট খাচ্ছেন। তার প্রতিবাদ করে আর এক জন বলছেন, ‘‘সিগারেটটা আপনার, দেশলাইটা আপনার, ধোঁয়াটাও নিশ্চয় আপনার, ওটাকে আপনার কাছেই রাখুন না!’’
দিন বদলেছে। বদলেছে অনেক কিছুই। কিন্তু জনপরিসরে ধূমপানের অভ্যাস এখনও বদলায়নি। ধোঁয়াটা নিজের কাছেও রাখা সম্ভব হয়নি। নিট ফল, যিনি ধূমপান করছেন তিনি তো স্বেচ্ছায় নিজের বিপদ ডেকে আনছেন। সেই সঙ্গে বিপদে ফেলছেন তাঁর আশপাশে থাকা লোকজনকেও।
ধূমপান যেমন ক্যানসারের কারণ, তেমনি হৃদরোগের প্রবণতাও বাড়িয়ে দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ধূমপানের কারণে ভারতবর্ষে প্রতি আট সেকেন্ডে এক জনের মৃত্যু হয়। দেশের মোট জনসংখ্যার হিসেবে, প্রতি চার জনে এক জন প্রত্যক্ষ ভাবে ধূমপান করেন। প্রায় ৬০ শতাংশ পুরুষ এবং ৫ শতাংশ মহিলা এই নেশায় আসক্ত। এর মধ্যে শতকরা ৫০ জন ধূমপান শুরু করে ১৫ বছর বয়স থেকে।
এক স্বাস্থ্য সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, ভারতবর্ষে ধূমপায়ীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। এ দেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫৫০০ জন করে ধূমপায়ীর পরিমাণ বাড়ছে। কলেজ পড়ুয়া দূরে থাক, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।
নিজে ধূমপান করি না বলে বেঁচে গেলাম— এটা ভুল ভাবনা। নিজে ধূমপান না করলেও পাশে কেউ ধূমপান করলে তারও প্রভাব পড়ে। আজ দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, কেউই ধূমপানের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। তাই শুধু নিজে নয়, পাশের জন যাতে ধূমপান করে ক্ষতি করতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে। অন্যদেরও সচেতন করতে হবে।