মিড ডে মিলের টাকায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিতর্ক

স্কুলেই দুর্নীতির পাঠ। সেই পাঠ দেওয়া হচ্ছে শিক্ষকদের। এমনটাই অভিযোগ তুলছেন নদিয়া জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা। প্রাথমিক স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরিচালনার জন্য স্কুলের মিড মিল থেকে টাকা দিতে হবে, বহু স্কুলকে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কিছু শিক্ষক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬ ০০:১১
Share:

স্কুলেই দুর্নীতির পাঠ। সেই পাঠ দেওয়া হচ্ছে শিক্ষকদের।

Advertisement

এমনটাই অভিযোগ তুলছেন নদিয়া জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা। প্রাথমিক স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরিচালনার জন্য স্কুলের মিড মিল থেকে টাকা দিতে হবে, বহু স্কুলকে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কিছু শিক্ষক। কোন কোন স্কুল এরই মধ্যে মিড ডে মিল থেকে টাকা দিয়েও দিয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে এবিপিটি-এর পক্ষ থেকে কৃষ্ণনগর-৩ চক্রের অফিসের দেওয়ালে পোস্টারও মারা হয়েছে।

ঘটনাটি সামনে আসার পরে নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। মঙ্গলবার দুপুরে সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় কৃষ্ণনগর-৩ নম্বর চক্রের ক্রীড়া পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের অন্যতম কিংশুক প্রামাণিকের কাছে বিষয়টি জানতে চান। মিড ডে মিল থেকে টাকা না তোলার নির্দেশ দেন।

Advertisement

তারপরই গোটা বিষয়টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে এবিপিটিএ পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। কোন কোন শিক্ষককে ফোনে নানা ভাবে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।

পঞ্চায়েত স্তর থেকে প্রাথমিক স্কুল গুলিকে নিয়ে প্রতি বছর ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। পঞ্চায়েতের পরে চক্র ও চক্র থেকে জেলা স্তরে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়। শিক্ষকদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত স্তরের জন্য কোনও টাকা দেওয়া হয় না। চক্রের জন্য দেওয়া হয় ৫ হাজার টাকা। এত কম টাকায় খেলা পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলেই শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রতিটি স্কুলের আপৎকালীন তহবিল থেকে একটা টাকা চাঁদা হিসেবে নেওয়া হত।

কিন্তু এ বছর অনেক স্কুলের তহবিল অর্থশূন্য। ফলে সেখান থেকে টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে এত টাকা আসবে কোথা থেকে? আর সেই সমস্যার ‘সমাধান’ করতেই মিড ডে মিলে হাত পড়েছে বলে অভিযোগ।

এবিপিটিএ নেতৃত্বের অভিযোগ, চক্র স্তরে খেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের সিংহভাগই তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের। তাঁরা মিড ডে মিলের খাত থেকে খেলার টাকা দিতে হবে বলে জোরাজুরি করছেন। বেশ কিছু স্কুল এরই মধ্যে টাকা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক মহলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। নাদুরিয়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক দীপক রায় বলেন, “মিড ডে মিলের এক দিনের খরচের ৮০ শতাংশ দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। অথচ কোন ভাউচার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা কী ভাবে খরচ দেখাব। তাহলে দুর্নীতির আশ্রয় নিতে হবে।’’

এবিপিটিএর জেলা সম্পাদক অমিতাভ নাগ বলেন, “মিড ডে মিলের টাকা অন্য খাতে খরচ করা যায় না। শিক্ষকদের দুর্নীতি করতে প্ররোচিত করা হচ্ছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা। খেলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষক কিংশুক প্রামাণিক এই বলেন, “এটা সত্যি নয়।’’

সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় বলেন, “মিড ডে মিলের টাকা নেওয়া যাবে না। সেটা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বলে দিয়েছি। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকেও জানাচ্ছি।”

স্মারকলিপি। চাকরির ক্ষেত্রে ওবিসিদের সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিতে কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি দিল বিজেপির ওবিসি সেলের সদস্যরা। বিজেপির দাবি, পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি সংরক্ষণের বিধি মানা হচ্ছে না। তার জন্য এই স্মারকলিপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন