আগ্নেয়াস্ত্রের খোঁজে অস্ত্র যখন ‘সোর্স’

ফরাক্কা, শমসেরগঞ্জ ও সুতি— ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া এই তিন থানার যে কোনও গ্রাম থেকে সরাসরি ঝাড়খণ্ড ও বাংলাদেশ সীমান্তে যাওয়া যায়। রেলপথেও যে কোনও রাজ্যে চলে যাওয়ার সহজ পথ নিউ ফরাক্কা জংশন স্টেশন। 

Advertisement

বিমান হাজরা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০৩:০৮
Share:

ফরাক্কা, শমসেরগঞ্জ ও সুতি— ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া এই তিন থানার যে কোনও গ্রাম থেকে সরাসরি ঝাড়খণ্ড ও বাংলাদেশ সীমান্তে যাওয়া যায়। রেলপথেও যে কোনও রাজ্যে চলে যাওয়ার সহজ পথ নিউ ফরাক্কা জংশন স্টেশন।

Advertisement

ফরাক্কা, ধুলিয়ান বা সুতি থেকে যে সব সড়ক পথ ঝাড়খণ্ডের দিকে গিয়েছে সেগুলিতে পুলিশের নাকাবন্দির ঝুঁকিও অনেকটাই কম। জাতীয় সড়কের পাশেই অবস্থিত কালিয়াচক। ফরাক্কা থেকে দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার, যা পেরোতে বাসে লাগে বড়জোর মিনিট চল্লিশ। বাস চলে কয়েকশো। আর সেই কারণেই কালিয়াচক থেকে দুষ্কৃতীরা অতি সহজেই বাসে মুর্শিদাবাদের এই তিন থানা এলাকায় পৌঁছে যেতে পারছে স্বল্প সময়ের মধ্যে। যোগাযোগের এই সুবিধের কারণেই কালিয়াচকের আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিরা মুর্শিদাবাদের এই তিন থানার এলাকাকেই আগ্নেয়াস্ত্রের সুবিধেজনক ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে বেছে নিচ্ছে বলে পুলিশের অনুমান।

কখনও ফরাক্কা বাসস্ট্যান্ড, কখনও ফরাক্কার মেলার মাঠ, কখনও জিগরি, শঙ্করপুর, ধুলিয়ান ডাকবাংলো, ধলা বা চাঁদের মোড়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকাকে বেছে নিচ্ছে অস্ত্রের কারবারিরা পুলিশের নজর এড়াতে। এটা বুঝেই পুলিশও এই তিন থানা এলাকাতে তাদের সোর্স বাড়িয়েছে। বলতে গেলে পুলিশের এই সক্রিয়তা ও বাড়তি সোর্সই পুলিশকে আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিদের ধরতে সাফল্য এনে দিচ্ছে মুর্শিদাবাদে।

Advertisement

জুন থেকে গত তিন মাসে অন্তত ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র শুধুমাত্র এই তিন থানা এলাকাতেই আটক করেছে পুলিশ, যেগুলি শুধুমাত্র বিক্রি করার জন্যই আনা হয়েছিল।

১১জুন সাত সকালেই সোর্স মাধ্যমে খবর পেয়ে ওত পেতেছিল পুলিশ নিউ ফরাক্কা বাসস্ট্যান্ডে। ব্যাগ হাতে এক যুবককে আটক করে। তার ব্যাগ খুলতেই মেলে ৯টি দেশি পিস্তল, ১৫ রাউন্ড তাজা গুলি। ধৃত যুবকের নাম মোক্তাজুল শেখ ওরফে ওহেদুর। বাড়ি মালদহের কালিয়াচক থানার করালিচাঁদপুর গ্রামে।

২৪ জুলাই বাইক-সহ ফরাক্কা পুলিশের হাতেই বামাল পাকড়াও হয় আলমগীর শেখ। ঘটনাস্থল নিউ ফরাক্কা বাসস্ট্যান্ড থেকে ৫০০ মিটার দূরে নির্জন মাঠ। ধৃতের বাইকের বাক্স খুলে মেলে ৭টি সেভেন এমএম পিস্তল, ১৪টি ম্যাগাজিন ও ৪৯ রাউন্ড তাজা কার্তুজ। আলমগীরের বাড়ি বৈষ্ণবনগরের চকদেওনাপুর গ্রামে। ৯ অগস্ট রাতে দশটি আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি করতে এসে শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কালিয়াচকের দুই অস্ত্র কারবারি। নাম মহম্মদ আলেমুল হক ও মহম্মদ ওয়াহিদ মোমিন। আটক হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৭টি ৭.৬৫ এম এম পিস্তল ও তিনটি ওয়ান শটার। মেলে ১৪টি ম্যাগাজিন ও ১০ রাউন্ড গুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন