নৌকাডুবি কমাতে জলধারা চালু রাজ্যের

শান্তিপুর-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় নদী-দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে বেশ কিছু মানুষের। হাল ফেরাতে কয়েকশো ফেরিঘাটের পরিকাঠামোর জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ঢেলে সাজা হচ্ছে যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়গুলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৩১
Share:

জলপথ পরিবহণ আরও নিরাপদ করতে ‘গতিধারা’র আদলে ‘জলধারা’ প্রকল্প চালু করল রাজ্য। উন্নত প্রযুক্তির নৌকা তৈরি করতে প্রকল্পে সরকারি ভর্তুকি ও ব্যাঙ্কঋণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রত্যাশিত ভাবেই উচ্ছ্বসিত ফেরিঘাটের মৈালিকরা।

Advertisement

শান্তিপুর-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় নদী-দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে বেশ কিছু মানুষের। হাল ফেরাতে কয়েকশো ফেরিঘাটের পরিকাঠামোর জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ঢেলে সাজা হচ্ছে যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়গুলি।

প্রশাসন সূত্রে খবর, পুরনো নৌকা বাতিল করে উন্নত প্রযুক্তির নৌকা কেনা বা পুরনো নৌকায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য যা খরচ হবে তার ৩০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা ভর্তুকি দেবে রাজ্য পরিবহণ দফতর। ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কর্তারা বলছেন, শুধু ঘাট নিয়ে মাথা ঘামালে হবে না। নৌকাও উন্নত করতে হবে। অন্যথায় মাঝনদীতে দুর্ঘটনা ঘটলে আরও বড় বিপর্যয় হবে।

Advertisement

গত বছর বর্ধমানের কালনাঘাটে ভাগীরথীতে ভুটভুটি ডুবে মারা যান শান্তিপুরের ২০ জন। কয়েক মাসের মাথায় মুর্শিদাবাদে রানিনগরের বামনাবাদে পদ্মায় নৌকাডুবিতে তিন জনের মৃত্যু হয়। মাস তিনেক আগে হুগলির ভদ্রেশ্বরেও তেলেনিঘাটের দুর্ঘটনায় ১৯ জন মারা গিয়েছেন।

ঘটনা হল, যন্ত্রচালিত নৌকাগুলির প্রায় সবই দেশি প্রযুক্তিতে তৈরি। না আছে পিছনের গিয়ার, না আছে ভাল ব্রেক। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার মতে, অভিজ্ঞ মাঝিরা না থাকলে কত দুর্ঘটনা ঘটত, তার ইয়ত্তা নেই। দুর্ঘটনা এড়াতে ঘাটগুলিতে এখন ‘সেমি-মেকানাইজড বোর্ড’ চালাতে চাইছে রাজ্য সরকার। ঠিক হয়েছে, আর্থিক দিক দেখবে পরিবহণ দফতরের ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার কর্পোরেশন’। তারাই ভর্তুকি থেকে শুরু করে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। প্রযুক্তির দিক দেখবে ‘পশ্চিমবঙ্গ অন্তঃদেশীয় জলপথ উন্নয়ন নিগম’। কোন নৌকা পুরোপুরি বাতিল হবে আর কোনটা সংস্কার করে আধুনিক যন্ত্র লাগিয়ে চালানো সম্ভব, তা তারাই ঠিক করবে।

তবে কোন সংস্থার মাধ্যমে এই নৌকাগুলি তৈরি করা হবে, এখনও তা জানায়নি পরিবহণ দফতর। জেলা প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন ফেরিঘাটের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। নবদ্বীপ জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি সম্পাদক গোপাল দাস বলেন, “সরকারি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।” জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “গাইডলাইন পেয়ে গিয়েছি। আরও কয়েকটি নির্দেশিকা পেলেই তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে দেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন