মৌসুমী হালদার
ছোট্ট এক চিলতে ঘরটাতে আসবাব বলতে একটা চৌকি। শোওয়া-বসা-ঘুমনো-পড়াশোনা, সবই ওই চৌকিতেই। সেখানেই থাকে পড়ার বইগুলোও। প্রতিবেশী বিভূতিভূষণ বিশ্বাসের বাড়িতে কাজ করার সুবাদে দীর্ঘদিন আগে তিনি দু’কাঠা জমি দান করেছিলেন মৌসুমীর ঠাকুরদাদাকে। সেখানেই একটা টালির ঘরে একমাত্র মেয়ে মৌসুমীকে নিয়ে তার মা-বাবার সাজানো সংসার।
৬৫১ নম্বর পেয়ে রাতারাতি তেহট্টের ‘স্টার’ হয়ে গিয়েছে মৌসুমী হালদার। তেহট্টের শ্রীদামচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সে। মৌসুমীর বাবা হরিদাস হালদার রাজমিস্ত্রী জোগাড়ের কাজ করেন। মা মহামায়া লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। এমন দিন আনা-দিন খাওয়া গরিবের সংসারে মৌসুমীর তাক লাগানো রেজাল্টে ধন্য ধন্য করছেন পাড়া-পড়শি সকলেই।
মহামায়াদেবী বলেন, “ওর বাবা তো রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে। আর আমি পাশাপাশি চারটি বাড়িতে কাজ করি। সংসারে দু’বেলা ভাত জোগাড় করা আর মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। তবে মৌসুমীর ছোট থেকেই পড়ার প্রতি মন ছিল। তাই খুব কষ্ট করে হলেও ওকে পড়িয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গৃহশিক্ষক রাখা সম্ভব হয়নি। মেয়ের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সাহায্য করেছেন। সকলের সাহায্য ও মৌসুমীর চেষ্টায় এই ফল। এখন ওর উঁচু ক্লাসে পড়ার খরচ করতে পারব কি না, সেটাই এখন আমাদের এক মাত্র চিন্তা।”