Primary Teacher

চাকরি খোয়ানো শিক্ষকের শূন্যপদ নিয়েই চলছে স্কুল

করিমপুরে চর মোক্তারপুর প্রাথমিক স্কুল থেকে এক শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৯৭। প্রধান শিক্ষককে নিয়ে শিক্ষক আছেন পাঁচ জন। তার মধ্যে পার্শ্বশিক্ষক দু’জন।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

নদিয়া শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের রায় বহাল রাখায় তাঁদের চাকরি ফিরে পাওয়ার কার্যত কোনও সম্ভবনা রইল না। কিন্তু তাঁদের জায়গায় এখনও শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। ফলে আতান্তরে পড়ছে স্কুল।

Advertisement

গত ১৩ জুন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে যে ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল হয়, তাকর মধ্যে নদিয়া জেলারও ১৪ জন ছিলেন। ওই রাতেই জেলার প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক ও প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে তালিকা-সহ নির্দেশ পৌঁছয়। সেই মতো শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। তার পর থেকে ওই ১৪ জন শিক্ষক আর স্কুলে যাচ্ছেন না। এই শিক্ষকেরা ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দেন এবং ২০১৭ সালে নিয়োগপত্র পান। প্রায় পাঁচ বছর তাঁরা চাকরি করে ফেলেছেন। অনেকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাঁদের ব্যক্তিগত ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু তাঁদের শূন্যপদে নতুন শিক্ষক না আসায় স্কুলও কম সমস্যায় পড়ছে না। এমনিতেই প্রায় বেশির ভাগ স্কুলে এখন শিক্ষকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম রয়েছে। তার মাসুল দিচ্ছে খুদে ছাত্রছাত্রীরা।

করিমপুরে চর মোক্তারপুর প্রাথমিক স্কুল থেকে এক শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৯৭। প্রধান শিক্ষককে নিয়ে শিক্ষক আছেন পাঁচ জন। তার মধ্যে পার্শ্বশিক্ষক দু’জন। এই স্কুলে আবার পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আছে। ফলে প্রাক প্রাথমিক থেকে ক্লাসের সংখ্যা ছ’টি। প্রায় প্রতি দিনই এক জন শিক্ষককে এক সঙ্গে দু’টি শ্রেণির ক্লাস নিতে হয়।

Advertisement

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মানবেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “পার্শ্বশিক্ষকদের আরও নানা দায়িত্ব পালন করতে হয়। ফলে তাঁরা অনেক দিনই স্কুলে আসতে পারেন না। এ ছাড়া অসুস্থতা বা অন্য কারণে কোনও শিক্ষক না-ইআসতে পারেন। আমাকেও নানা কাজে নানা অফিসে যেতে হয়। কোনও মতে জোড়াতালি দিয়ে স্কুলচালাতে হচ্ছে।”

প্রায় একই কথা বলছেন করিমপুর সার্কেলেরই চর নবীনগঞ্জ প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম আনসারিও। ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় আড়াইশো। শিক্ষক মোট পাঁচ জন, তার মধ্যে এক জন পার্শ্বশিক্ষক। যে শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে তাঁর শূন্যপদ পড়েই রয়েছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, “কোনও কারণে এক জন শিক্ষক না এলেই সমস্যা হয়ে যায়। তখন এক শিক্ষককে এক সঙ্গে একাধিক ক্লাস নিতে হয়।”

এতে যে পঠনপাঠনের ক্ষতি হচ্ছে তা শিকার করে নিচ্ছেন শিক্ষকেরাও। প্রশ্ন হল, চাকরি যাওয়া শিক্ষকদের ফাঁকা পদে কবে শিক্ষক পাঠানো হবে?

জেলার প্রাথমিক শিক্ষাসংসদের সভাপতি বিমলেন্দু সিংহ রায় বলেন, “উৎকর্ষশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে বদলি হতে চাওয়া বা বদলি হয়ে জেলায় আসাশিক্ষকদের ওই স্কুলগুলিতে পাঠানো যেতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কী নির্দেশ দেন, সেটা দেখতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন