Education

‘দাদা এ তো তুই-ই রে!’

গোয়েন্দা গল্পের পোকা ছেলেটি কিন্তু বলে ফেলছে, ‘‘ভাল লাগছে না ঘরবন্দি থাকতে আর। করোনার ভয়ে বাধ্য হয়ে মেনে নিচ্ছি, কিন্তু এ বার একটা কিছু হোক!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২০ ০৬:৩৬
Share:

বিভাবসু মণ্ডল

টিভির পর্দায় খবরটা শুনে প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি বিভাবসুর। পাশ থেকে বোনই চেঁচিয়ে উঠেছিল, ‘‘এতো তুই রে দাদা!’’ ধাতস্থ হতেই মণ্ডল বাড়ির ছেলেটি বোন অন্বেষাকে জাপটে ধরেছিল। কোন প্রাইভেট টিউশন ছাড়াই গোরাবাজার ঈশ্বরচন্দ্র ইন্সটিটিউশনের এই ছাত্রের সাফল্য এসেছে এ বার। ঝাউবোনা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তার বাবা, বাবলু মণ্ডল বলছেন, “প্রথম থেকেই ও খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ। জানতাম ভাল ফল করবে, তা বলে ৬৮৩ পেয়ে রাজ্যে পঞ্চম হবে এতটাভাবিনি।” গোয়েন্দা গল্পের পোকা ছেলেটি কিন্তু বলে ফেলছে, ‘‘ভাল লাগছে না ঘরবন্দি থাকতে আর। করোনার ভয়ে বাধ্য হয়ে মেনে নিচ্ছি, কিন্তু এ বার একটা কিছু হোক!’’ ছেলের সাফল্যে খুশি মা বিউটি বলছেন, “ ওর গবেষক হওয়ার স্বপ্ন, তবে যা অবস্থা হয়ে আছে, জানি না কবে কী করে কোথায় ভর্তি হবে।’’

Advertisement

কান্দি রাজ হাইস্কুলে সাফল্য এনে দিয়েছে জেলার আর এক কৃতী দেবাক্ষ। স্কুলের প্রধানশিক্ষক ভূমানন্দ সিনহা বলছেন, “দশ লক্ষ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ও যে সপ্তম হবে তা মেধা তালিকা ঘোষণার সময়েও বুঝতে পারিনি। ১৬১ বছরের বিদ্যালয়ে নতুন পালক যোগ করল দেবাক্ষ।” স্থানীয় কোচিং সেন্টার আর বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাইরে তিন জন গৃহশিক্ষকের সাহায্য পেছে দেবাক্ষ। বলছে, “আমার সাফল্যের পুরো কৃতিত্ব বাবা-মায়ের। শিক্ষকেরা সাহায্য করেছেন ঠিকই তবে ওঁরা নাছোড় ছিলেন।’’ ভবিষ্যতে অধ্যাপনা করতে চায় সে। এবং তা চিকিৎসা বিদ্যায়। দীর্ঘলকডাউনে বিরক্তি এসেছে দেবাক্ষর। ছবি আঁকা আর গল্পের বইপাগল ছেলেটি বলছে, “লকডাউন প্রয়োজন ছিল, তবে হাতে কিছুটা সময় দিলে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হত না।”

মহাঞ্জন দেবনাথের স্থান অষ্টম। ৯ জন গৃহশিক্ষকের সাহায্যে মহাঞ্জন দেবনাথ মাধ্যমিকে ৬৮৫ নম্বর পেয়েছে। বহরমপুর জেএন একাডেমির এই পড়ুয়ার অঙ্ক বরাবরের ভাল লাগার বিষয়। মাধ্যমিকে এক মাত্র অঙ্কেই একশোতে একশো পেয়েছে সে। সমাজ সচেতন মহাঞ্জন বলছে, “পরিযায়ীদের দেখে কষ্ট লেগেছে। আমি চাই এই রাজ্যের মানুষদের চিকিৎসা করতে।”

Advertisement

৬৮৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দশম স্থান পেয়েছে চয়নিকা মুর্মু। চয়নিকা প্রণবানন্দ বিদ্যাপীঠের ছাত্রী। সাত জন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশোনা করেছে সে। তবে ভাল করেও তার চিন্তা দূর হচ্ছে না। চয়নিকা বলছে, “অনলাইনে এইভাবে পড়াশোনা সম্ভব নয়। মাধ্যমিকের থেকেও উচ্চমাধ্যমিক অনেক কঠিন। এই অবস্থা চললে তার প্রভাব পড়বে পড়াশোনায়।”

উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন