কোথাও শব্দ, কোথাও জল

জলঙ্গি বাঁচাতে পথে পড়ুয়ারা

কচুরিপানার জালে আটকে এমনিতেই মরতে বসেছে নদীটা। তার উপর আবার ফি বছর প্রতিমা ভাসান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৬ ০১:২৩
Share:

জলঙ্গির কোমড় জলে নিত্য মাছ ধরা। — নিজস্ব চিত্র

কচুরিপানার জালে আটকে এমনিতেই মরতে বসেছে নদীটা। তার উপর আবার ফি বছর প্রতিমা ভাসান।

Advertisement

জগদ্ধাত্রীপুজোর মুখে তাই এ বার প্রচারে নামল কৃষ্ণনগর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। এ দিন বিকেলে বিসর্জন ঘাটে চলে যায় তারা। হাতে পোস্টার, মুখে একটাই কথা— ‘‘আমাদের শহরের প্রাণকেন্দ্র জলঙ্গিকে বাঁচান।’’ তাদের আবেদন, দয়া করে বিসর্জনের সময় প্রতিমার সঙ্গে মুকুট-জড়ি-চুমকি বা শোলার জিনিস জলে ভাসাবেন না।

আসলে বিসর্জনের সময় সাজপোশাক-সহই বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা। ফলে দূষিত হয় নদীর জল। ছাত্রীদের আবেদন, দূষণ রুখতে জড়ি-চুমকি খুলে রাখা হোক। তারা এ দিন বিকেলে কৃষ্ণনগরের জলঙ্গি নদীর বিসর্জন ঘাটে এই আবেদন জানিয়ে পোস্টার দেয়। তা ছাড়া তারা সোশ্যাল মিডিয়াতেও পুজো কমিটিগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছে। কোনও পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘জলঙ্গিকে বাঁচান’, তো কোনওটায় ‘বিসর্জনের আগে প্রতিমার সাজপোশাক, যা জলকে দূষিত করে, সেগুলো খুলে রেখে বিসর্জন দিন।’

Advertisement

অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া কৌশানী ভট্টাচার্য, সোহিনী দে-র কথায়, ‘‘জলঙ্গি নদীর দূষণ ও তার প্রতিকার নিয়ে স্কুলে একটা প্রজেক্ট করেছি আমরা। দুর্গাপুজোর পরে কৃষ্ণনগরে জলঙ্গি নদীর ঘাটে যে সব জায়গায় বিসর্জন হয়, সেই সব জায়গায় গিয়ে আমরা ছবি-সহ নানা তথ্য সংগ্রহ করি। পরে কী ভাবে এর প্রতিকার করা যায়, সে বিষয়ে প্রতিবেদনও তৈরি করেছি। আমাদের স্কুলের নামে সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে সেই সব আমরা তুলে ধরেছি।’’ তারা বলে, ‘‘শুধু তা-ই নয়, এ বারে পুজো কমিটি থেকে সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে আমরা এই আবেদন জানাচ্ছি।’’ কিন্তু দুর্গোৎসবের আগে তারা উদ্যোগী হল না কেন? ওই স্কুলের আর এক ছাত্রী অন্বেষা বিশ্বাসের কথায়, ‘‘আমাদের শহরে জগদ্ধাত্রী পুজোই সব থেকে ভাল করে হয়। তাই এখনই জলঙ্গিকে বাঁচানোর আবেদন জানানো হচ্ছে।’’ পড়ুয়াদের আর্জিকে স্বাগত জানাচ্ছেন কৃষ্ণনগরের জজকোর্টপাড়া বারোয়াড়ি জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সম্পাদক সুজয় সিংহরায়। বলেন, ‘‘জলদূষণ করে এমন জিনিস প্রতিমার গা থেকে যতটা সম্ভব সরিয়েই আমরা নদীতে বিসর্জন দেব।’’

কী বলছে পুরসভা? পুরসভার সাফাই বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সলিন স্বপন সাহা বলেন, ‘‘নদীর ধারে ঘট ও ফুল ফেলার জন্য জায়গা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও অনেকে ফুল, ঘট নদীর জলে ফেলে দেন।’’ স্বপনবাবু জানান, বিসর্জনের পরের দিনই আমরা প্রতিমার কাঠামো নদী থেকে তুলে ফেলি ঠিকই, কিন্তু সাজপোশাক-মুকুট তোলা যায় না। বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলো জলে ভেসে যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন