ছিলেন প্রার্থী, সুজাতার কাঁটা টিএমসিপি-ই

ভোট মিটতেই কৃষ্ণনাথ কলেজে অনলাইনে ভর্তি নিয়ে অধ্যক্ষ তথা তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরোধ বেধেছে টিএমসিপি-র। গত সোমবার কলেজের মধ্যে ৬ ঘণ্টা অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে রেখেছিলেন টিএমসিপি সমর্থকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ০০:৩৭
Share:

বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ। — নিজস্ব চিত্র

ভোট মিটতেই কৃষ্ণনাথ কলেজে অনলাইনে ভর্তি নিয়ে অধ্যক্ষ তথা তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরোধ বেধেছে টিএমসিপি-র।

Advertisement

গত সোমবার কলেজের মধ্যে ৬ ঘণ্টা অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে রেখেছিলেন টিএমসিপি সমর্থকেরা। বিরোধ মেটাতে মঙ্গলবার কলেজে যান শিক্ষামন্ত্রীর দুই প্রতিনিধি। এক জন যুগ্ম ডিপিআই এবং অন্য জন সচিব পদমর্যাদার। যুযুধান দু’পক্ষেরই দাবি, শিক্ষামন্ত্রীর দুই প্রতিনিধি তাঁদের পক্ষে সায় দিয়ে গিয়েছেন।

বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা হতেই কৃষ্ণনাথ কলেজের প্রধান ফটকের মাথায় বিশাল ব্যানার টাঙিয়ে অধ্যক্ষের পক্ষে ভোটের প্রচার শুরু করেছিল টিএমসিপি। তা নিয়ে বিতর্কও বাধে। নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘিত হওয়ায় প্রশাসন ও অধ্যক্ষের হস্তক্ষেপে সে দিনই ব্যানার খুলতে হয়েছিল টিএমসিপি-কে। এখন সেই সংগঠনই নানা ভাবে অধ্যক্ষকে হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘ঘেরাওকারীদের দাবি ছিল আগের মতো ম্যানুয়ালি কাউন্সেলিং করে ভর্তি নিতে হবে। ওই দাবি নস্যাৎ করে অনলাইনেই ভর্তি নিতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিনিধি। ফোনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও অনলাইনেই ভর্তি করতে বলেছেন।’’

ওই কলেজে টিএমসিপি-র শাখার দায়িত্বে রয়েছেন বিপ্লব কুণ্ডু। তিনি ওই কলেজের বিগত ছাত্র সংসদের সম্পাদক তথা জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি। বিপ্লবের পাল্টা দাবি, ‘‘ছাত্র সংসদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে অধ্যক্ষকে কাজ করতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রীর দুই প্রতিনিধি। তাতে আমাদের দাবিই মান্যতা পেয়েছে।’’

যে দাবি উড়িয়ে দিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘২০১৪ সালের পরে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। বিগত ছাত্র সংসদের অনেকেই পাশ করে কলেজ ছেড়েছেন। ফলে, বিগত ছাত্র সংসদের বর্তমান অবস্থান কী তা জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়েছি। এখনও তার উত্তর মেলেনি। তাই ছাত্র সংসদের সঙ্গে আলোচনা করে কলেজ চালানোর প্রশ্নটাই অবান্তর।’’

বিপ্লবের অভিযোগ, কলেজের হাজার টাকার বেশি কোনও কাজ করাতে হলে টেন্ডার করতে হয়। কিন্তু টেন্ডার না করেই অনলাইনে ভর্তির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি সংস্থাকে। সেই সংস্থার সার্ভার হামেশাই বসে যাচ্ছে। ফলে ২৫, ২৬, ২৯, ৩০ মে কেউ অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ করতে পারেননি। একই কারণে বৃত্তিমূলক শাখায় ১৯ থেকে ২৬ মে কেউ ভর্তি হতে পারেননি। ২৭ ও ২৮ তারিখ— মাত্র দু’দিন অনলাইনে বৃত্তিমূলক শাখায় ভর্তির সুযোগ মিলেছে।

এ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘কলেজের পারচেজিং কমিটি রয়েছে। সেই কমিটি সরকারি নিয়মনীতি মেনে অনলাইনে ফর্ম পূরণ ও ভর্তির জন্য সংস্থা নিয়োগ করেছে।’’ বিপ্লবের বক্তব্য, ‘‘কৃষ্ণনাথ কলেজে প্রতি বছর ২২ হাজার ফর্ম জমা হয়। এ বার মোটে সাড়ে ১৪ হাজার ফর্ম জমা হয়েছে।’’ অধ্যক্ষ অবশ্য বলেন, ‘‘ওই তথ্য পুরোপুরি ভুল। গত বছর ১১ হাজার ফর্ম জমা হয়েছিল। এ বছর ১৬ হাজার ফর্ম জমা হয়েছে।’’

শিক্ষামন্ত্রীর দুই প্রতিনিধির বৈঠকে কৃষ্ণনাথ কলেজের সমস্যা মিটেছে কি? লক্ষণ তো বলছে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন