ভেস্তে গেল বৈঠক, ধর্মঘট চলছেই

সিমেন্ট কারখানার শ্রমিক ধর্মঘট সোমবার চার দিনে পড়ল। কয়েক দফা আলোচনার পরেও শ্রমিক ও মালিক, দু’পক্ষই অনড় থাকায় ভেস্তে যায় বৈঠক। এ দিকে, কারখানার এক নিরাপত্তা কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে আন্দোলনরত চার শ্রমিকের বিরুদ্ধে রঘুনাথগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। সোমবারই জঙ্গিপুর আদালতে হাজির হয়ে শ্রমিকেরা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৫ ০০:৩৩
Share:

চলছে বিক্ষোভ।— নিজস্ব চিত্র

সিমেন্ট কারখানার শ্রমিক ধর্মঘট সোমবার চার দিনে পড়ল। কয়েক দফা আলোচনার পরেও শ্রমিক ও মালিক, দু’পক্ষই অনড় থাকায় ভেস্তে যায় বৈঠক।
এ দিকে, কারখানার এক নিরাপত্তা কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে আন্দোলনরত চার শ্রমিকের বিরুদ্ধে রঘুনাথগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। সোমবারই জঙ্গিপুর আদালতে হাজির হয়ে শ্রমিকেরা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এ দিন কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে ঠিকাদারদের গোলমালের আশঙ্কার আঁচ পেয়ে পুলিশ যায় কারখানায়। উত্তেজনা থাকলেও কোনও অশান্তির ঘটনা অবশ্য ঘটেনি।
রঘুনাথগঞ্জের ধলো গ্রামের এই কারখানায় প্রায় ৪০০ শ্রমিক রয়েছেন। সকলেই তৃণমূলের কর্মী, সমর্থক। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের মজুরি সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় গত ১১ জুন। শ্রমিকদের অভিযোগ, শ্রমিক নেতারা ওই মজুরি চুক্তি করে শ্রমিকদের কার্যত ভাতে মেরেছেন। এই শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কেতাবুল শেখের দাবি, ‘‘শ্রমিকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে নেতারা চুক্তিতে সই করেছেন। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই এমনটা করা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, এ বার আর কোনও রাজনৈতিক দল নয়, আমরা নিজেরাই সংগঠন চালাব। সমস্ত শ্রমিক এ ব্যাপারে সহমত হয়েছেন বলেও তাঁর দাবি।
ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অভিযোগ, তৃণমূল নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্র এমনকি গেট পাস দেওয়া হবে। এখনও তা দেওয়া হয়নি। এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘পিএফের টাকা কাটা হচ্ছে সেই প্রথম দিন থেকে। কিন্তু সে টাকা জমা দেওয়ার কোনও প্রমাণ নেই। নেই বিমার ব্যবস্থাও। শ্রমিকদের পোশাক, সাবান, মেডিক্যাল কিছুই দেওয়া হয় না!’’ দুই শ্রমিক দুর্ঘটনায় আহত হলেও কানাকড়ি ক্ষতিপূরণ পাননি বলেও অভিযোগ। তৃণমূলের স্থানীয় কিছু নেতা তাঁদের পাশে রয়েছেন বলেও শ্রমিকদের দাবি।

Advertisement

শ্রমিক ধর্মঘটের ফলে চার দিন কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকেরা কারখানার গেট না আটকে বিক্ষোভ চলায় পুলিশও কোনও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারছে না। শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের জঙ্গিপুরের পর্যবেক্ষক সৈয়দ সাদেক রিটু। তিনি পেশায় সরকারি আইনজীবী। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে শ্রমিকদের হয়ে হাজির ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিকেরা ওই চুক্তি মানতে চাইছেন না। কারণ ফরাক্কায় একটি সিমেন্ট কারখানায় শ্রমিকেরা ১২ হাজার টাকা বেতন পান। অথচ এই কারখানার শ্রমিকেরা তার অর্ধেক বেতন পান। এখন কর্তৃপক্ষ সেটাও দিতে চাইছেন না! তাই আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে।’’

কারখানার পার্সোনেল ম্যানেজার সুমন কল্যাণ রায়ের কথায়, ‘‘সরকারি নিয়ম মতো যা প্রাপ্য তা দিতে আপত্তি করিনি। কিন্তু ওরা চাইছেন ধর্মঘটের দিনের বেতন। তা দেওয়া যাবে না। তাই আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন