মহিলা কনস্টেবলের অভাব, বহু স্কুল জানেই না ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ কমিটি

স্কুলের শিক্ষিকার কাছে ছুটতে ছুটতে এসে খবরটা দিয়েছিল দুই ছাত্রী। সঙ্গে সঙ্গে খবরটা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল স্কুলের ‘স্বয়ংসিদ্ধা কমিটির’ কাছে। তারপর সবাই মিলে ছুটেছিলেন তেহট্টের ছিটকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ১৩:৪০
Share:

স্কুলের শিক্ষিকার কাছে ছুটতে ছুটতে এসে খবরটা দিয়েছিল দুই ছাত্রী। সঙ্গে সঙ্গে খবরটা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল স্কুলের ‘স্বয়ংসিদ্ধা কমিটির’ কাছে। তারপর সবাই মিলে ছুটেছিলেন তেহট্টের ছিটকায়।

Advertisement

গ্রামে দুই নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ের কথা পাকা। ২৫ বৈশাখ ছিল বিয়ের দিন। অভিভাবকদের বুঝিয়ে সেই বিয়ে রুখেছে স্বয়ংসিদ্ধা কমিটি। ১৮ মার্চ তেহট্টের নাজিরপুর সারদা বালিকা বিদ্যালয়ে এই কমিটি তৈরি হয়। তারা পাঁচ নাবালিকা বিয়ে আটকেছে।

কিন্তু সর্বত্রই ছবিটা কিন্তু একই রকম নয়। মহিলা কনস্টেবলের অভাবে জেলার সব স্কুলে এখনও স্বয়ংসিদ্ধা কমিটিই তৈরি হয়নি। সোমবারই কোতোয়ালি থানায় এসে শক্তিনগর গার্লস হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী পুলিশকে জানিয়েছিল, ‘‘ও স্যার, আমাকে বাঁচান। জোর করে বাবা-মা আমার বিয়ে দিচ্ছে। বিয়ে করব না। আমি আরও পড়তে চাই।’’

Advertisement

অথচ ওই ছাত্রী স্বয়ংসিদ্ধা কমিটির নামই জানত না। স্কুল কর্তৃপক্ষও মানছেন, এখনও তাঁরা সে ভাবে কমিটিকে সচল করতে পারেননি। কৃষ্ণনগরের লেডি কারমাইকেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মালা সাহা যেমন বলছেন, “মাস দু’য়েক আগে কমিটি গঠন করেছি। কিন্তু পুলিশের তরফে কেউ যোগাযোগ করেননি। জানিই না যে ঠিক কী করতে হবে।”

সোমবার দেবগ্রামের এক নাবালিকার বিয়ে আটকেছে প্রশাসন। দেবগ্রাম ডি কে গার্লস হাই স্কুলের টিআইসি বন্দিতা বিশ্বাস বলছেন, “এখনও পর্যন্ত এমন কোনও কমিটি আমরা গঠন করতে পারিনি।” আবার আরও এক ধাপ এগিয়ে করিমপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা ইন্দ্রাণী সিকদার বলেন, ‘‘এমন কোনও কমিটির কথা আমাদের তো কেউ বলেইনি।” আবার নাজিরপুরের মতো বহু স্কুলের স্বয়ংসিদ্ধার সদস্যরা খুব ভাল কাজ করছে। কোথাও কোথাও আবার চাইল্ড লাইনকে নিয়ে এসে সচেতনতা শিবির করা হচ্ছে। বিভিন্ন থানার ওসিরা বলছেন, ‘‘এত মহিলা কনস্টেবল পাব কোথা থেকে? সেই কারণে, কয়েকটা স্কুল বেছে নিয়ে আপাতত কাজ শুরু করা হয়েছে। ভাল ফলও মিলছে। আগামী দিনে স্কুলের সংখ্যা আরও বাড়বে।”

নদিয়া জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর পারমিতা দত্ত বলেন, “জেলায় যত নাবালিকা বিয়ে আটকানো হয় পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে তাদের অনেকেরই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে স্বয়ংসিদ্ধা কমিটির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারাই পারে পরের ঘটনার খবরটা রাখতে।” পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “এই কমিটি আগামী দিনে আরও সক্রিয় হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন