দিনভর বন্ধ পঠনপাঠন

পড়ুয়াকে চড়, প্রহৃত শিক্ষক

ক্লাসে ডেকে তাই একটু কড়া শাসনই করেছিলেন শিক্ষক। অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্ররে গালে কষিয়ে দিয়েছিলেন চড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

করিমপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ১৩:২১
Share:

পথে-প্রতিবাদ: ধোড়াদহে। শুক্রবার। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক

ক্লাসে যখন পরীক্ষার খাতা দেখাচ্ছেন তিনি তখন বাইরের করিডরে হুটোপুটি করছিল ছেলেটি।

Advertisement

ক্লাসে ডেকে তাই একটু কড়া শাসনই করেছিলেন শিক্ষক। অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্ররে গালে কষিয়ে দিয়েছিলেন চড়।

দিনান্তে সেই চড়ই ফিরে এসেছিল থানারপাড়া ধোড়াদহ রজনীকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অমিত সেনগুপ্তের গালে। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে লোক জুটিয়ে অমিতবাবুকে রাস্তাতেই হেনস্তা করে ওই ছাত্রের বাড়ির লোকজন। এমনই অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষক। তার প্রতিবাদে শুক্রবার, ওই স্কুলে ক্লাস বয়কট করেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

Advertisement

স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকি বলেন, “শিক্ষক ছাত্রকে একটু শাসন করবেন না! তার জন্য একজন শিক্ষককে রাস্তায় নিগৃহীত হতে হবে?’’ মারধরের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ায়অমিতবাবুকে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তিও করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।

রাজ্যে পালাবদলের পরে শিক্ষাঙ্গনে তাণ্ডবের ঘটনা নতুন নয়। রায়গঞ্জ থেকে রামরাজাতলা। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ— একের পর এক শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনার সাক্ষী থেকেছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ। কিছু দিন আগে, এ ব্যাপারে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও। জানিয়েছিলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে এই ধরনের ‘বেয়াদবি’ একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না।

কার্যক্ষেত্রে তা কিন্তু হয়নি। ছুতোনাতায় শিক্ষকদের মারধরের ঘটনা, তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ওই স্কুলের শিক্ষক অমিতবাবু বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ক্লাশে ইউনিট টেস্টের খাতা দেখাচ্ছিলেন। খেয়াল পড়ে অষ্টম শ্রেণীর ওই ছাত্র দুই সহপাঠীকে নিয়ে খেলে বেড়াচ্ছে। ক্লাসে ডেকে তাকে সাসন করেন তিনি। কিছুক্ষণ পরেই জনা কয়েক ছেলেকে জুটিয়ে ফিরে আসে সে, আাসে তার বাবা বিক্রম বিশ্বাসও। তার পর স্কুলের মধ্যেই তাঁকে গালমন্দ শুরু করে। সে দিনই, টিফিনের সময় অমিতবাবু স্কুল লাগোয়া একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। সেই সময়ে বিক্রম জনা কয়েক প্রতিবেশীকে জুটিয়ে সেখানে হাজির হয়, চার পর শুরু হয় মারধর।

অমিতবাবু বলেন, “ছাত্রটি আমার ছেলের মতো, তাকে শাসন করতে পারব না!’’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত পাল বলেন, ‘‘এ ভাবে এক জন শিক্ষককে মারধর করা শিক্ষক সমাজের অপমান।’’ এখন প্রশ্ন এই ‘অপমান’ কত দিন চলবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন