হাতখরচ বাঁচিয়ে রক্তদান শিবির কিশোরদের

মাধ্যমিক পাশ করার পরে তাদের সেই ইচ্ছে আর তাগিদ আরও তীব্র হল। মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে এক দিন বন্ধুরা মিলে আড্ডা মারার সময়েই শুভজিৎ, কুশলরা ঠিক করে ফেলল, আর শুধু ভাবনা নয়, এখনই কিছু একটা করে ফেলতেই হবে। বড় কষ্টে রয়েছেন অনেক মানুষ।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৫
Share:

চলছে রক্তদান শিবির। নিজস্ব চিত্র

ছোটবেলা থেকেই তাগিদটা তাদের তাড়িয়ে বেড়াত। জন্মালাম আর মরে গেলাম—এই জীবন নাই বা হল। একটু অন্য পথে হাঁটা, যতটুকু সামর্থ্য তার মধ্যেই মানুষের জন্য কিছু করতেই হবে।

Advertisement

মাধ্যমিক পাশ করার পরে তাদের সেই ইচ্ছে আর তাগিদ আরও তীব্র হল। মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে এক দিন বন্ধুরা মিলে আড্ডা মারার সময়েই শুভজিৎ, কুশলরা ঠিক করে ফেলল, আর শুধু ভাবনা নয়, এখনই কিছু একটা করে ফেলতেই হবে। বড় কষ্টে রয়েছেন অনেক মানুষ। যতটুকু তারা করতে পারবে তাতেঅন্তত কিছু মানুষের সামান্য কিছু সুরাহা তো হবে।

ব্যাস! একাদশ শ্রেণির ৯ জন ছাত্র আর ৩ জন ছাত্রী তৈরি করে ফেলল ‘সংকল্প’। তাদের নিজেদের একটি সংগঠন। তাদের সাথে যোগ দিলেন কলেজের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়া এবং একাদশ শ্রেণিরর দুই ছাত্রের অভিভাবক। এই বছরের ১৫ আগস্ট পথচলা শুরু হল। নেহাত মধ্যবিত্ত পরিবারের ওই কিশোর-কিশোরীরা নিজেদের হাত খরচের টাকা জমিয়ে চার মাসের মধ্যেই করে ফেলেছে বই বিতরণ, বস্ত্র বিতরণ। গত মঙ্গলবার শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলে এই কিশোর কিশোরীরাই আয়োজন করেছিল রক্তদান শিবিরের। এদের কারও বয়স আঠারো হয়নি। তাই নিজেরা রক্ত দিতে পারেনি। তাতে দমে না-গিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে রক্তদান শিবিরে আসতে। উৎসাহ দিয়েছে। ২০ জন রক্ত দিয়েছেন তাদের শিবিরে। রক্তদাতার সংখ্যা কম হলেও কিশোর-কিশোরীদের এমন চেষ্টায় রক্তদান আন্দোলনে জড়িতরা অভিভূত।

Advertisement

সঙ্কল্পের জন্য নিজেরাই একটি ভাণ্ডার তৈরি করেছে এই পড়ুয়ারা। শখের জিনিস না-কিনে হাতখরচের টাকা সেই ভাণ্ডারে জমা করছে। ইতিমধ্যে শান্তিপুরের বিভিন্ন ইটভাটায় গিয়ে যেমন শ্রমিকদের ছেলেমেয়ের হাতে বই ও শীতের জামা কাপড় তুলে দিয়েছে। পুজোর সময় দুঃস্থদের দিয়েছে নতুন জামা। বৃক্ষরোপন করেছে এলাকায়।

সংকল্প-এর সম্পাদক কুশল প্রামানিক বলেন, “কিছু দিন আগে আমাদের এক পরিচিত অসুস্থ হয়ে পড়েন। রক্ত জোগাড় করতে হিমশিম খান আত্মীয়েরা। অনেক কষ্টে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত জোগাড় হয়। তার পরেই আমরা রক্তদান শিবির করব বলে স্থির করি।” শিবিরে লিভিং ব্লাড ডোনার ব্যাঙ্ক এবং স্টেম সেল ডোনারের নথিভুক্তিকরণের কাজও হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন