সাত মাসেই বেহাল সেতু, ক্ষুব্ধ জঙ্গিপুর

চালু হওয়ার সাত মাসের মধ্যে রেলের উড়ালপুলের কংক্রিটের ঢালাই ধসে বেরিয়ে পড়েছে লোহার রড। তার জেরে গত সপ্তাহে পাঁচটি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আট জন মোটরবাইক ও টোটোর আরোহী। গত বছরের ২৭ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসানসোল থেকে উড়ালপুলটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। জঙ্গিপুর রোড স্টেশন লাগোয়া মিঞাপুরে ১৩.৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩৮.৩২ মিটার দীর্ঘ ও ৭.৫০ মিটার প্রশস্ত ওই উড়ালপুলটি তৈরি হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৫ ০১:৫০
Share:

এই সেই সেতু। জঙ্গিপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।

চালু হওয়ার সাত মাসের মধ্যে রেলের উড়ালপুলের কংক্রিটের ঢালাই ধসে বেরিয়ে পড়েছে লোহার রড। তার জেরে গত সপ্তাহে পাঁচটি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আট জন মোটরবাইক ও টোটোর আরোহী।
গত বছরের ২৭ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসানসোল থেকে উড়ালপুলটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। জঙ্গিপুর রোড স্টেশন লাগোয়া মিঞাপুরে ১৩.৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩৮.৩২ মিটার দীর্ঘ ও ৭.৫০ মিটার প্রশস্ত ওই উড়ালপুলটি তৈরি হয়। মহকুমা শহর রঘুনাথগঞ্জে ঢোকার প্রধান প্রবেশ পথ এই রেল সেতুটি। ফলে সেতু দিয়ে অতিরিক্ত যান চলাচলের চাপ রয়েছে। সাত মাসের মধ্যে সেই সেতুর এমন হালে উদ্বেগ বেড়েছে যান চালকদের। বাস-লরির বড় গাড়ির ক্ষেত্রে তেমন ঝুঁকি না থাকলেও বিপদে পড়ছেন ছোট গাড়ির চালকেরা।
কিছু দিন আগেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন বাইক চালক উমরপুরের সাজ্জাদ শেখ। তিনি বলেন, ‘‘আগে রেলের ফটক পেরিয়ে যাতায়াত হত। কিন্তু সেতু চালুর পরদিনই নীচের সেই রেল ফটক সিল করে রেল। ফলে বাইক, রিক্সা, ভ্যান, এমনকি সাইকেলও সেতুর উপর দিয়ে চলাফেরা করছে। ভাঙা সেতুতে দুর্ঘটনাও হচ্ছে।’’ মিঞাপুরে রেল ফটকে যানজটের দুর্ভোগ থেকে বাঁচতেই ২৮ মিটার দীর্ঘ মূল সেতুটি তৈরি করে রেলমন্ত্রক। পরে তার দু’দিকে দুটি সংযোগ সড়ক তৈরি করে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর। পূর্ত দফতরের মতে, দু’দিকে পিচের সংযোগ সড়কটি ঢালু হওয়ায় নিকাশি নিয়ে সমস্যা নেই। কিন্তু পুলের মূল অংশে নিকাশির ব্যবস্থা রাখা হয়নি। সেখানে বৃষ্টির জল অনেকক্ষণ জমে থাকছে।

Advertisement

সেই জমা জলের চাপে সেতুর উপর থেকে কংক্রিটের ঢালাই উঠে লোহার শিক বেরিয়ে পড়েছে বলে পূর্ত দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন। তার ফলেই ঘটছে একের পর এক দু্র্ঘটনা। বিপদ আরও বাড়ছে রাতে। কেমন? এক চালকের কথায়, ‘‘দিনের বেলায় যা-ও বা পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায়, রাতের বেলায় তা করা যায় না!’’

জঙ্গিপুরের পূর্ত (সড়ক) দফতরের সহকারি বাস্তুকার অরুণ সরকার বলেন, ‘‘সেতুটি দীর্ঘ দিন এমন ভাবে পড়ে থাকলে ক্রমশ তা খারাপ হবে।’’ সারানো হচ্ছে না কেন? তাঁর দাবি, ওই অংশটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রেলের। বিষয়টি মালদহ ডিভিশনের রেলের কর্তাদের জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। তবে এখনও কাজ শুরু না হওয়ায় উড়ালপুলটি একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

Advertisement

মালদহের ডিআরএম রাজেশ অর্গলকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। জবাব মেলেনি এসএমএস-এরও। তাঁর দফতরের এক অফিসার জানান, বিষয়টি রেলের নির্মাণ বিভাগের নজরে এসেছে। দ্রুত রেল সেতুর বিপজ্জনক অংশ মেরামত করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন