ব্যাগ ফেরালেন লছিমন চালক

পেশায় রাজমিস্ত্রি শরিফ শেখ ও তাঁর পরিবার টাকা-গয়না ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ০২:৩০
Share:

রূপকুমার মণ্ডল।

সূত্র বলতে ব্যাগে পাওয়া আধার কার্ড। সেই কার্ডে লেখা ঠিকানা ধরে বাড়ি গিয়ে ফিরিয়ে দিলেন খোয়া যাওয়া টাকা-গয়না ভর্তি ব্যাগ!

Advertisement

শুনতে অবিশ্বাস্য ঠেকলেও সম্প্রতি এমনই এক নজির গড়লেন লছিমন চালক রূপকুমার মণ্ডল। সিঙ্গারের বাসিন্দা রূপকুমার কয়েক কিলোমিটার উজিয়ে সাগরদিঘির কৃষ্ণপুর দিয়াড় গ্রামে পৌঁছন কুড়িয়ে পাওয়া ব্যাগ ফিরেয়ে দিতে। সে ব্যাগে ছিল নগদ কয়েক হাজার টাকা-সহ দেড় ভরি সোনার গয়না।

পেশায় রাজমিস্ত্রি শরিফ শেখ ও তাঁর পরিবার টাকা-গয়না ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা।

Advertisement

গত ২৩ জুন নবগ্রাম থেকে সিঙ্গার যাতায়াতের পথে একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পান সিঙ্গারের বাসিন্দা ওই যুবক। দেখেন ব্যাগের মধ্যে নগদ ১৫ হাজার টাকা। রয়েছে সোনার গয়না ও বাড়ি ও জমির দলিল-সহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। ব্যাগেই থাকা আধার কার্ডে লেখা ঠিকানার খোঁজ করে যান শরিফ শেখের বাড়িতে।

শরিফ শেখ জানান, বোনের বিয়ের জন্য বানাতে দেওয়া সোনার গয়না নবগ্রাম মোড়ের দোকান থেকে নিয়ে সিঙ্গার ঘুটনিডাঙা গ্রামে মামাকে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে মোটরবাইক থেকে কোনও ভাবে ওই ব্যাগটি রাস্তায় পড়ে যায়। পরে যখন বুঝতে পারেন, তখন আর কিছু করার ছিল না। ব্যাগ ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।

সিঙ্গার গ্রামে টিনের ছাউনি দেওয়া মাটির বাড়ি। বাড়িতে বাবা-মা ছাড়াও রয়েছে স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে। যন্ত্রচালিত লছিমন চালিয়ে মেরেকেটে আয় আড়াইশো থেকে তিনশো টাকা। ওই আয়ে সংসার চলে।

রূপকুমার জানান, ওই পরিবার খুশি হয়ে দশ হাজার টাকা তাঁকে দিতে চান। কিন্তু তিনি নেননি। তিনি বলেন, ‘‘ওই টাকা-গয়না পেয়ে রাতে ঘুমোতে পারিনি। আধার কার্ড থেকে ঠিকানা খোঁজ করতে করতে ওই বাড়িতে পৌঁছে ব্যাগ ফেরত দিয়ে স্বস্তি পাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন