Protest

মামলার জেরে ‘মধুর’ সম্পর্ক ফের প্রকাশ্যে

হাইকোর্টে ডিভিশন বেঞ্চে নীলরতনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি জনস্বার্থ মামলা রুজু করেছেন জনৈক রেবা শর্মা। তবে সে ব্যাপারে তিনি ওয়াকিবহাল হয়েছেন খবরের কাগজ পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ০৫:৩৮
Share:

বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য।— ফাইল চিত্র।

হাইকোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হওয়ায় বুধবার মন্তব্য করতে চাননি তিনি। তবে, বৃহস্পতিবার শুধু মন্তব্য নয়, বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান জানিয়ে দিলেন, ওই মামলা করার পিছনে দলেরই একাংশের প্রচ্ছন্ন মদতের কথা। যাকে ঘিরে লকডাউনে প্রায় অস্তমিত হয়ে যাওয়া তৃণমূলের দলীয় কোঁদল ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠল বলেই টিপ্পনী কাটছেন বিরোধীরা। তা যে অমূলক নয়, নীলরতনের পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতাদের মন্তব্যেই তা স্পষ্ট। এই আকচাআকচি নতুন মোড় নেওয়ায় তৃণমূলের এক জেলা নেতার মন্তব্য, ‘‘এ সব পুরনো রেষারেষির ক্ষত, এত সহজে সারে!’’

Advertisement

হাইকোর্টে ডিভিশন বেঞ্চে নীলরতনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি জনস্বার্থ মামলা রুজু করেছেন জনৈক রেবা শর্মা। তবে সে ব্যাপারে তিনি ওয়াকিবহাল হয়েছেন খবরের কাগজ পড়ে। নীরতনের কথায়, ‘‘কাগজ পড়েই তো জানলাম, আমাকে কেউ জানাননি।’’ সেই মামলায় স্বজনপোষণ থেকে টাকা তছরুপ, অভিযোগের দীর্ঘ তালিকা। সে সবই অস্বীকার করে প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যানের দাবি, “আমি চাইছি এ সব অভিযোগের পূর্ণ তদন্ত হোক।” তবে ওই ‘মিথ্যে’ মামলার জেরে যে দলের (তৃণূলের) যথেচ্ছ ক্ষতি হচ্ছে মনে করিয়ে দেন তা-ও। তিনি বলেন, ‘‘এ সবই দলের এক শ্রেণির ছোট মাপের নেতার কারসাজি। তারা বোঝে না এতে আদতে দলেরই ক্ষতি হচ্ছে।’’

অভিযোগের তালিকায় রয়েছে, তাঁর পুত্রের দোকানঘর ভাড়া নিয়েও মাসিক ভাড়া না-গোনার নালিশ। নীলরতন বলছেন, ‘‘যে কেউ দোকান ভাড়া নিতে পারেন। দেখতে হবে সে নিয়মিত ভাড়া দিচ্ছে কিনা। অনেকেই ভাড়া একসঙ্গে দেয়। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন আমার ছেলে টাকা দেননি বা পুরসভার টাকা আমার মদতে আত্মসাৎ করা হয়েছে তা হলে রাজনীতিই ছেড়ে দেব।”

Advertisement

তবে এই মামলার পিছনে তিনি যে দলের টাউন সভাপতির ছায়া দেখছেন, কোনও রাখখঢাক না রেখেই তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন নীলরতন। তিনি বলেন, ‘‘বহরমপুরের মানুষ জানেন এ কাজ নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের। পুরসভার ৯৯ শতাংশ কর্মচারী আমার পক্ষে। আসলে পুরসভায় প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হয়েছে, এই মুহুর্তে বহরমপুর পুরসভায় কোন প্রশাসক নেই। অন্য পুরসভার মতো বহরমপুরেও প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে, তাই নাড়ুগোপাল আশঙ্কিত।’’ এ ব্যাপারে নাড়ুগোপাল অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘রেবা শর্মা নামে এক মহিলা মামলা করেছেন বলে শুনেছি। তাঁকে আমি চিনিও না। তবে, শুনেছি প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান অসুস্থ, আমি তাঁর সুস্থতা কামনা করি।’’

এই ঘটনা, দলের টাউন সভাপতির সঙ্গে নীলরতনের ‘মধুর’ সম্পর্ক ফের সামনে এনে দিয়েছে। তবে, জেলা তৃণমূল সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, “এই মামলার পিছনে দলের কোনও সম্পর্ক আছে বলে জানি না। যা বিচার করার মহামান্য আদালত করবে।

তবে এ নিয়ে বিঁধতে ছাড়ছেন না বিরোধী নেতারা। জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস যেমন বলেন, “তৃণমূলের ঘরের কোন্দল রাস্তায় এসে পড়েছে। তবে যাই হোক না কেন, তদন্ত করে মানুষের সামনে প্রকাশ করা হোক দূর্নীতির সঙ্গে জড়িত কোন নেতা এবং কোন দালালচক্র।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement