পরপর তিন রাতে অস্ত্র নিয়ে পাকড়াও তিন

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দিন তিনেক আগে পুলিশ রাতে প্রথম হানা দিয়েছিল বগুলা সাহাপাড়ায় অমিয় প্রামাণিকের বাড়িতে। সেখানে একটি দেশি পাইপগান ও এক রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। গ্রেফতার করা সহয় অমিয়কে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, বেশ কয়েক বছর ধরে সে অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত। আদতে তার বাড়ি ছিল শান্তিপুরের ফুলিয়া এলাকায়। কয়েক বছর আগে শান্তিপুর থানার পুলিশ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৭ ০৫:১৭
Share:

অস্ত্রের কারবারে জড়িত পরপর তিন জনকে গ্রেফতারের পরে পাচার চক্রের ছায়া দেখছে নদিয়া জেলা পুলিশ। তাদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই চক্র মারফত জেলায় বেআইনি অস্ত্র ঢুকছিল। তবে কত জন এই চক্রে জড়িত, জালই বা কত দূর ছড়িয়ে, সে ব্যাপারে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, গত তিন দিনে হাঁসখালি ও ভীমপুর থানা এলাকা থেকে তিন জনকে ধরা হয়। তাদের জেরা করে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আরও বেশ কয়েক জনের নাম জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তাদের নাগাল পাওয়া যায়নি।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দিন তিনেক আগে পুলিশ রাতে প্রথম হানা দিয়েছিল বগুলা সাহাপাড়ায় অমিয় প্রামাণিকের বাড়িতে। সেখানে একটি দেশি পাইপগান ও এক রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। গ্রেফতার করা সহয় অমিয়কে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, বেশ কয়েক বছর ধরে সে অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত। আদতে তার বাড়ি ছিল শান্তিপুরের ফুলিয়া এলাকায়। কয়েক বছর আগে শান্তিপুর থানার পুলিশ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে সে আর নিজের এলাকায় ফেরেনি। উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়া, পরে কামারহাটি এলাকায় কয়েক বছর কাটানোর পরে সে চলে আসে বগুলায়।

Advertisement

তদন্তকারীরা জেনেছেন, অমিয় মাঝে-মধ্যেই বাসা বদলাত। পরিবার ও এলাকার লোকেদের সে বলেছিল, কলকাতায় হকারি করে। তাতে এত দিন কারও সন্দেহ হয়নি। সম্প্রতি অন্য একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে হাঁসখালি থানার পুলিশ জানতে পারে, অমিয় ওরফে চটকের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র এসেছে বিক্রির জন্য। সেই খবরের ভিত্তিতে পুলিশ তার বাড়িতে হানা দেয়। পুলিশের দাবি, জেরায় সে অপরাধ কবুল করে। সেই সঙ্গে আরও কয়েক জনের নাম জানায়, যারা তার কাছ থেকে অস্ত্র কিনেছে।

অমিয়র কথা মতো গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ উত্তর ভায়নার বাসিন্দা কানাইলাল বিশ্বাসের বাড়িতে হানা দেয়। সেখান থেকে একটি দেশি নাইন এমএম পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। গ্রেফতার করা হয় কানাইলালকেও। তার বাড়ি সিন্দ্রানি এলাকায়। কয়েক বছর আগে ভায়নায় এসে থাকতে শুরু করে সে। বিদেশে লোক পাঠানোর এজেন্ট হিসেবে কাজ করে ভাল রোজগারও করে। জেরায় সে দাবি করেছে, ব্যবসার জন্য নয়, নিজের নিরাপত্তার জন্যই সে সঙ্গে অস্ত্র রাখত। তবে পুলিশ তার কথায় আমল দিতে রাজি নয়।

বুধবার রাতে হামনা দেওয়া হয় ভীমপুরের কুলগাছি বাজারের কাছে এক বাড়িতে। ১২ বোরের দেশি রিভলভার-সহ গ্রেফতার করা হয় পূর্ব ভাতজাংলার ভগীরথ ঘোষকে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, এর আগেও সে এক বার আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল। বিক্রির উদ্দেশ্যেই সে অমিয় প্রামাণিকের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছিল বলে পুলিশের দাবি। পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরা করে চক্রের সঙ্গে যুক্ত আরও লোকের নাম জানা গিয়েছে। জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন