সংসারটা ছারখার হয়ে গেল

নয়ানজুলিতে হুড়মুড়িয়ে নেমে যাওয়া বাসের সামনের দিকেই বসে ছিলেন ওঁরা। ছোট মেয়ে অনুস্কা (২) দমবন্ধ হয়ে মারা যায় সেখানেই।

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক

তেহট্ট শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০১:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভাগ্নেকে সাপে কেটেছে, সেই খবরে সোমবার দুপুরের বাসে তেহট্টের নিশ্চিন্তপুর রওনা হয়েছিলেন চাঁদেরঘাটের অনুপ হালদার। সঙ্গে স্ত্রী টুকটুকি আর দুই মেয়ে। তরণীপুর থেকে ভিড় বাসেই চেপে বসেছিলেন তাঁরা। গলাকাটা মোড়ে দুর্ঘটনাটা তার মিনিট কুড়ির মধ্যেই।

Advertisement

নয়ানজুলিতে হুড়মুড়িয়ে নেমে যাওয়া বাসের সামনের দিকেই বসে ছিলেন ওঁরা। ছোট মেয়ে অনুস্কা (২) দমবন্ধ হয়ে মারা যায় সেখানেই। আহত টুকটুকিকে তড়িঘড়ি পাঠানো হয়েছিল তেহট্ট গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখান থেকে শক্তিনগর। বিকেল গড়াতে অবস্থা খারাপ হওয়ায় একটা অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে বাড়ির লোক টুকটুকিকে নিয়ে ছুটেছিলেন কলকাতার হাসপাতালের দিকে। তবে তাঁরা পৌঁছতে পারেননি। রাস্তায় জাগুলির কাছে মারা যান তিনি। রাতেই দেহ নিয়ে ফিরে আসা হয় শক্তিনগর হাসপাতালে। তবে মা-মেয়ে মারা গেলেও ওই দুর্ঘটনায় রক্ষে পেয়েছেন বড় মেয়ে বছর দশেকের অনিশা। পেশায় রং মিস্ত্রি অনুপের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল টুকটুকির। সদ্য পাকা হয়েছিল ঘর। মৃত টুকটুকির আত্মীয় অনিতা হালদার বলছেন, ‘‘এক দুপুরেই সব কেমন ওলট পালট হয়ে গেল!’’

সোমবার রাতে ঘুমের মধ্যে সাপে ছোবল দিয়েছিল অনুপের দিদির ছেলে পাপনকে (১৭)। তাকে প্রথমে পলাশিপাড়া এবং পরে শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সোমবার বিকেলেই মারা যায় সেই সদ্য তরুণ। সেই সাপে-কাটা দেহ নিশ্চিন্তিপুরে আনার আগেই খবর আসে গলাকাটা মোড়ের বাস দুর্ঘটনার কথা। বাড়ির উঠোনে বসে অনুপ শুধু বিড়বিড় করছেন, ‘‘গোটা সংসারটা কেমন ছারখার হয়ে গেল গো!’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন