চাপড়ায় জখম ৪ শ্রমিক

ভাটায় চাপা পড়ে মৃত ৩

শুক্রবার চাপড়ার রাজীবপুরের ওই ইটভাটায় গুরুতর জখম হয়েছেন আরও চার জন। তাঁরা শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাপড়া শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৭
Share:

অকুস্থল: এখানেই ভেঙে পড়ে ইটের পাঁজা। নিজস্ব চিত্র

ভাটায় কাজ করার সময় ইট চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে দুই মহিলা-সহ তিন জনের। ঘটনাস্থলেই মারা যান চাপড়ার ঘোষপাড়ার কল্পনা ঘোষ (৫৫) ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা সুনীতা ওরাং (৩০)। পরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে মারা যান রঘু ওরাং (৪৫)। তাঁর বাড়িও ঝাড়খণ্ডে।

Advertisement

শুক্রবার চাপড়ার রাজীবপুরের ওই ইটভাটায় গুরুতর জখম হয়েছেন আরও চার জন। তাঁরা শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জখম হীরালাল মাঝি বলেন, ‘‘আমরা প্রায় ৩০ জন ভিতর থেকে পোড়া ইট নামাচ্ছিলাম। আচমকা বাইরের দেওয়াল ভেঙে পড়ে। তার পরে আর কিছু জানি না।” এ দিকে বিকট শব্দ শুনে ছুটে যান অন্য শ্রমিকেরা। তাঁরা দ্রুত ইট সরিয়ে উদ্ধার কাজে হাত লাগায়। উদ্ধারকারীদের এক জন আনার শেখের কথায়, ‘‘তড়িঘড়ি ইট সরিয়ে সবাইকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। কিন্তু সবাইকে বাঁচাতে পারলাম কই!’’

ঘটনার পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ইটভাটা। শ্রমিকেরা কেউই বুঝতে পারছেন না, কী করে ইটের দেওয়াল ভেঙে পড়ল। তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, এই সব দেওয়াল ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। বেশিরভাগ ভাটায় বিপজ্জনক ভাবে কাজ করেন শ্রমিকেরা।

Advertisement

মৃতেরা। নিজস্ব চিত্র

যদিও ওই ভাটার মালিক আশা শেখ বলছেন, ‘‘মাস দু’য়েক আগে গার্ডওয়ালটা তৈরি করেছিলাম। কেন এমনটা ঘটল, বুঝতে পারছি না।” তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে, কারও কোনও অনুমতি ছাড়াই ওই ইটভাটা চলছে। তবে এই অভিযোগ যে অমূলক নয় তা কবুল করছেন জেলা প্রশাসনও।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘ওই ভাটার বৈধ লাইসেন্স নেই। দুর্ঘটনার পাশাপাশি লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও অবৈধ ভাবে ভাটা চালানোর জন্য আইনি পদক্ষেপ করা হবে।” কিন্তু এত দিন তা করা হয়নি কেন? সে প্রশ্নের অবশ্য সদুত্তর মেলেনি। তবে মৃতদের পরিবার সরকারি ভাবে ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট ব্রিকফিল্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি অসীম সাহার দাবি, “ওই ইটভাটার কোনও লাইসেন্স নেই। এটা বেআইনি ভাবে চলছে। আসলে প্রশাসনের নজরদারি থাকলে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটত না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন