প্রতীকী চিত্র।
দলের উপদেষ্টামণ্ডলী ঠাঁই হল না দুই প্রাক্তন জেলা সভাপতির। জেলা কমিটিতে আর পাঁচ জন বিধায়কের মতোই শুধু আমন্ত্রিত সদস্য করে রেখে দেওয়া হল বর্ষীয়ান দুই নেতা গৌরীশঙ্কর দত্ত ও পুণ্ডরীকাক্ষ সাহাকে। যা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হতে শুরু করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এতে বিধানসভা ভোটের আগে দলের ভিতরে ‘বিভাজন’ আরও চওড়া করে দিল জেলায় দলের বর্তমান ক্ষমতাশালী গোষ্ঠী। গৌরীশঙ্কর দত্তের বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত তেহট্ট ১-এর ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন কমিটি নিয়ে গৌরীশঙ্করবাবুর ছোট্ট প্রতিক্রিয়া, “খুবই ভালো হয়েছে।”
দলের আর এক প্রবীণ নেতা তথা রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি শঙ্কর সিংহকে উপদেষ্টামন্ডলীতে রেখে দেওয়া হলেও বিভিন্ন ব্লক ও শহর কমিটি থেকে ছেটে দেওয়া হয়েছে তাঁর অনুগামীদেরকে। কুপার্স ক্যাম্প শহর সভাপতি থেকে শুরু করে তাহেরপুর, বীরনগর শহর সভাপতি পদ থেকে শঙ্করবাবুর অনুগামীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গয়েশপুরের সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন কমিটির কথা শুনে শঙ্করবাবু বলছেন, “ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি, নতুন জেলা সভাপতি দলকে আরও গতিশীল করে তুলুন।” তবে তাঁর ছেলেকে জেলা সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। উপদেষ্টামন্ডলীতে ঠাঁই দেওয়া হলেও নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁর ডানা ছাঁটা হয়েছে। তাঁর প্রবল অপত্তি সত্ত্বেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে নাকাশিপাড়া ব্লক সভাপতির পদে থাকা অশোক দত্তকে। বারবার ফোন করেও এ দিন পাওয়া যায়নি কল্লোলবাবুকে।
সব মিলিয়ে এক মাত্র মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস ছাড়া তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের মুখ বলে পরিচিত অন্য সব নেতাদের কার্যত নির্বাসনে পাঠিয়ে দেওয়া হল বলে মনে করছেন দলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী। চাকদহ ব্লক সভাপতি পদে দিলীপ সরকারকে রেখে দেওয়া হলেও ‘গুরুত্বহীন’ আমন্ত্রিত অতিথি হয়েই থেকে যেতে হল রাজ্যের আর এক মন্ত্রী রত্না ঘোষ করকে। উপদেষ্টামন্ডলীতে ঠাঁই হয়নি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডুর-ও। তবে উপদেষ্টামন্ডলীতে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে বর্তমান জেলা সভাপতির একমাত্র ঘনিষ্ঠ বিধায়ক হিসাবে পরিচিত পলাশিপাড়ার তাপস সাহাকে।
হাঁসখালি ব্লককে দু’টো ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেখানে নিয়ে আসা হয়েছে নতুন মুখ। কৃষ্ণনগর শহর সভাপতি হিসাবে তুলে আনা হয়েছে শিবনাথ চৌধুরীকে। আবার রুকবানুর রহমানের প্রবল আপত্তি সত্বেও ব্লক সভাপতি পদে রেখে দেওয়া হয়েছে জেবের শেখকে। বর্তমান জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্রের ব্যাখ্যা, সবাইকে অর্থাৎ পুরনোদের পাশাপাশি অন্য দল থেকে আসা বা তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে গিয়ে আবার তৃণমূলে ফিরে আসা নেতাদেরও কমিটিতে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে।